রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৯ শিক্ষক কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে কাফনের কাপড় পাঠানো ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির চার কর্মকর্তাকে আদালতে তলব করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার এই চার কর্মকর্তার নমুনা স্বাক্ষর/লেখা সংগ্রহ করার লক্ষ্যে আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেওয়া হয়।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়, জিডি তদন্তকারী কর্মকর্তা জিডি তদন্ত, সত্যতা যাচাই করার প্রয়োজনে বিতর্কিত ব্যক্তি রুয়েটের পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক, নির্বাহী প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব ও সিনিয়র সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন ইতির স্বাক্ষর/লেখা সংগ্রহ করা এবং হ্যান্ড রাইটিং পরীক্ষার জন্য আদালতে হাজির করার জন্য আবেদন করেছেন। জিডি সংক্রান্তে সঠিক তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তার দাখিলী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নমুনা স্বাক্ষর/লেখা সংগ্রহ করার জন্য আগামীকাল আদালতের উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
জানা গেছে, গত ৬ ডিসেম্বর রুয়েট শিক্ষক সমিতি ও শুদ্ধাচার কমিটির সদস্যরা কয়েকজন কর্মকর্তাকে নির্ধারিত সময়ে অফিসে হাজির না হওয়া ও প্রায়ই অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। এদের মধ্যে রুয়েটের পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আলবেরুনী ফারুকও ছিলেন। ওই দিন দুপুরে তিনি শুদ্ধাচার কমিটি ও শিক্ষক সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাকবিতণ্ডায় জড়ান এবং তাদের দেখে নেবেন বলে হুমকি প্রদান করেছিলেন। এরপর গত ২১ ডিসেম্বর রুয়েটের ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তার নামে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে চিঠি আসে।
চিঠিতে প্রেরকের ঠিকায়নায় ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’ উল্লেখ ছিল। চিঠি খুললে এর ভেতরে সাদা কাফনের দুটি করে টুকরো পায় বিশ্ববিদ্যালয়টির ৯ শিক্ষক-কর্মকর্তা। হুমকি পাওয়া একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তার সন্দেহ এভাবে চিঠিতে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক , মোতাহার হোসেনসহ তাদের সহযোগীরা জড়িত থাকতে পারে। তবে আলবেরুনী ফারুক এমন অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
চিঠিতে সাদা কাপটের টুকরো পাওয়ার ঘটনায় ওই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন মতিহার থানায় একটি ডিজি করেন। এই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে জিডি তদন্তকারী কর্মকর্তার সুষ্ঠু তদন্ত ও যাচাই-বছাই করার প্রয়োজনে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে।
আদালতে তলবের বিষয়ে রুয়েটের পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী ফারুক বলেন, ‘৯ শিক্ষক-কর্মকর্তার কাছে ডাকযোগে চিঠির খামের মধ্যে সাদা কাগজ পাঠানো হয়েছিল। এই ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছিল। সেখানে আমাদের ব্যাপারে অভিযোগ করা হয়েছিল। হয়তো ওই চিঠির খামের উপরে হাতের লেখা মিলানোর জন্য আমাদেরকে আদালতে ডাকা হয়েছে।’
কামাল হোসেন ইতি বলেন, ‘আমাকে আসলে কেনো আদালতে ডাকা হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়।’
Leave a Reply