1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন

কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে : তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩

অমুসলিম কাদিয়ানিদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ।

শনিবার রাজধানীর খিলগাঁও মাদরাসায় পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরীহ মুসলমানদের ওপর বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলটির মহাসচিব আল্লামা মহিউদ্দিন রাব্বানী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘খতমে নবুওয়তের আকিদা মুসলমানদের ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মাদ সা: সমগ্র মানব জাতির জন্য সর্বশেষ নবী ও রাসূল। তাঁর নবুওয়তের সার্বভৌমত্ব কোনো কালেই খর্ব হবে না। আল্লাহর পক্ষ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত নতুন কোনো নবীর আগমন ঘটবে না। এ বিশ্বাস মুসলমান রূপে পরিচিত দেয়ার জন্য অপরিহার্য শর্ত। কেউ এ শর্ত অমান্য করলে বা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে প্রিয় নবীজি সা:-এর নবুওয়তে সামান্যতম ভাগ বসানোর অপপ্রয়াস চালালে সে নিজেকে মুসলিম দাবি করতে পারে না। সে মুসলমান নয়। প্রিয় নবীজি সা:-এর প্রতি এই সুস্পষ্ট বিশ্বাস ও আনুগত্যই মুসলিম জাতির অস্তিত্ব রক্ষার চাবিকাঠি।’

তিনি আরো বলেন, ঊনিশ শতকের শেষ দিকে ইংরেজ বেনিয়ারা নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থের জন্য সার্বিক সহযোগিতায় মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানি নামের এক ভণ্ড প্রতারককে নবী দাবি করার প্রতি প্ররোচিত করে। তখন সে নিজেকে নবী বলে দাবি করে। এ সময় কিছু মনগড়া ভ্রান্ত আকিদার সমন্বয়ে সে নতুন ধর্মমতের গোড়াপত্তন করে। এ মনগড়া ধর্মকে সে ইসলাম ও তার অনুসারীদেরকে আহমদিয়া মুসলিম নাম দেয়।

তিনি বলেন, কুরআনের শতাধিক আয়াত ও আড়াই শতাধিক হাদিসের মাধ্যমে মোহাম্মাদ সা: সর্বশেষ নবী এবং তাঁর পর আর কোনো নবী নেই, সু-প্রমাণিত। অজস্র আয়াত ও সহিহ হাদিস দ্বারা দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণিত, হজরত মোহাম্মাদ সা: সর্বশেষ নবী। তাঁর পরে আর কোন নবী আসবেন না। পূর্ববর্তী সালফে সালেহীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদিনসহ বিশ্বের সকল হকপন্থী আলেম-উলামা, মুফতিয়ানে কেরাম ও পীর-মাশায়েখের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত- কাদিয়ানি মতবাদ একটি কুফুরি মতবাদ। এ মতের অনুসারীরা মুসলিম নয়। শুধু তাই নয়, যদি কোনো মুসলিম কাদিয়ানীদের কাফের হওয়ার বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করে, তিনিও কাফের হয়ে যাবেন। যুগে যুগে মুসাইলামা কাজ্জাব, তুলাইহা, আসওয়াদ আনাসীর মতো অনেক ভণ্ড ও মিথ্যাবাদীর উদ্ভব হয়েছে। মুসলিম উম্মাহ এদের সকল অপ্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান ও প্রতিরোধ করেছে। তারই ধারাবহিকতায় মিথ্যা নবী দাবিদার মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকেও প্রত্যাখ্যান করেছে।

মাওলানা রাব্বানী বলেন, ১৯৫৭ সালে সিরিয়া সরকার, ১৯৫৮ সালে মিশর সরকার, ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান সরকার, ১৯৭৩ সালে আযাদ কাশ্মীরের এসেম্বিলি কাদিয়ানিদের অমুসলিম ও কাফের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়াও পৃথিবীর বহু মুসলিম দেশ কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে কাফের ঘোষণা করেছে। ১৯৭৪ সালে রাবেতায়ে আলমে ইসলামির অন্তর্ভুক্ত ১০৪টি দেশের প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধান্তে কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে অমুসলিম ও সংখ্যালঘু হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বিগত ১৯৯৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেছে যে ‘আইনের দৃষ্টিতে কাদিয়ানি সম্প্রদায় অমুসলিম ও কাফের’। বিচারপতি আব্দুল জলিল ও বিচারপতি ফজলুল করিমের যৌথ বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করে। তাছাড়া বাগদাদে অনুষ্ঠিত ওআইসির সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের ধর্মমন্ত্রী নাজিম উদ্দিন আল আজাদের উপস্থিতিতে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা করা হয়।

তিনি বলেন, কাদিয়ানিরা অমুসলিম হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের মুসলমান দাবি করে ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে ঈমানহারা করছে। দেশের সংবিধান মতে কাদিয়ানিদের ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে। তাহলে মুসলমানদের কি নিজেদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করার অধিকার নেই? স্বাধীনতার নামে কি ইসলাম ও মুসলমানদের ধর্মীয় পরিভাষা ও রীতিনীতি চুরি করে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করার অধিকার দিতে হবে? আর এক্ষেত্রে মুসলমানগণ কি বাধাও দিতে পারবে না? এটা কি দেশের সংবিধানসম্মত কোনো বক্তব্য? দেশের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পোষাক পরে কেউ যদি চুরি ডাকাতি করে, এটা কি তাদের সাংবিধানিক অধিকার? তাহলে কাদিয়ানিরা অমুসলিম হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে ইসলাম ও মুসলমানদের পরিভাষা ব্যবহার করার সুযোগ দেয়া সংবিধানবিরোধী নয় কেন? এজন্যই দেশের সর্বস্তরের মুসলমান কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন ও সংগ্রাম করছে।

তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত মহাসচিব বলেন, গত ৩ মার্চ কাদিয়ানিরা অসাংবিধানিকভাবে মুসলমানদের পরিভাষা ব্যবহার করে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক জলসা করার উদ্যোগ নেয়। তাদের জলসা বন্ধ করার দাবিতে পঞ্চগড়ের সর্বস্তরের মুসলমান স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজপথে নেমে আসে। ওই ন্যায়সঙ্গগত প্রতিবাদী আন্দোলনে বিনা উস্কানিতে নিরীহ মুসলমানদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বর্বরোচিত হামলা চালায়। এতে আরিফুজ্জামান নামের একজন মুসলিম যুবক ঘটনাস্থলে শাহাদাত বরণ করেন। আহত হন শতাধিক। এদের মাঝে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

প্রশাসনের অহেতুক, অযাচিত হামলা ও গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-

১। কাদিয়ানি সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের সব ধরনের বইপুস্তক, লিটারেচার, লিফলেট, পাক্ষিক, মাসিক পত্র-পত্রিকার মুদ্রণ, প্রচার, সংরক্ষণ, বিতরণ ও সভা-সমাবেশ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।
২। হামলা ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৩। নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
৪। গতকাল শুক্রবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঈমানী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কাউকে মামলা, গ্রেফতার ও হয়রানি করা যাবে না।

এ সময় তিনি দুই দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
১। আগামী শুক্রবার দেশব্যাপী সকল মসজিদে আকিদায়ে খতমে নবুওয়তের ওপর আলোচনা করা এবং শহীদ আরিফুজ্জামানসহ আহত সকলের জন্য বিশেষভাবে দু’আ করা।
২। দ্রুত সময়ে উপরোক্ত দাবিগুলো বাস্তবায়ন না করলে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মাওলানা মাহফুজুল হক ও মাওলানা জহুরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারী ও মুফতী মাসউদুল করীম, কেন্দ্রীয় নেতা মুফতী রুহুল আমীন বাহাদুরপুরী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা এনামুল হক মুসা, প্রচার সম্পাদক মাওলানা রাশেদ বিন নূর, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, দফতর সম্পাদক মুফতী আল আমীন ফয়জী, সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ, মুফতী যুবায়ের রশীদ, মাওলানা সাঈদুল ইসলাম, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা ইসহাক, মাওলানা নাসির উদ্দীন, মাওলানা মেরাজুল ইসলাম ও মাওলানা ইউনুস কাসেমী প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com