করোনা ভাইরাসের আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইতালি। মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস ঠেকাতে নানা পদক্ষেপের পাশাপাশি দেশটিতে ইতোমধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তারপরও প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গত শুক্রবার একদিনেই ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৬ জন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৬৬০ জনে।
ভাইরাস প্রতিরোধে গত সোমবার থেকে দেশটিকে রেডজোনের আওতাভুক্ত ঘোষণা করার পর থেকেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে দেশের প্রায় ৬ কোটি মানুষ। ৩ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মিউজিয়াম, থিয়েটার, সিনেমা, স্টেডিয়াম, কনসার্টসহ জনসমাগমের স্থানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির ব্যস্ততম শহরগুলো পরিণত হয়েছে জনশূন্য নগরীতে। যেন এক ভুতুড়ে দেশ। সারাদেশে ফার্মেসি এবং খাবারের দোকান ছাড়া সব কিছুই বন্ধ রয়েছে।
ইতালির মিলানে বসবাস করেন প্রবাসী বাংলাদেশি শোহেভ আহমেদ নিরব। আমাদের সময়কে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে সবার মধ্যেই। আমরা বন্দি জীবনযাপন করছি, রাস্তাঘাট ফাঁকা জনশূন্য, এখানকার প্রায় সব কিছু বন্ধ। বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাইকিং করে বের হতে নিষেধ করছে। এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে সবাই বাস করছে।
ইতালির পাদোভা অঞ্চলে এ ভাইরাসের প্রকোপে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অন্য শহরের চেয়ে বেশি। সেখানকার বসবাসকারী ইব্রাহিম খান বলেন, ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে একদিনেই ২৫০ জনের মৃত্যুর খবরে সবাই আতঙ্কিত।
ইতালির সঙ্গে ইউরোপের অন্য দেশের সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। দেশের যাতায়াত ব্যবস্থায় গণপরিবহনগুলোর সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। কিছু কিছু বাস চললেও প্রায় সবই ফাঁকা। বাসের ভেতরে আলাদা করে ঘেরাও দেওয়া হয়েছে যেন এক যাত্রী অন্য যাত্রীর সংস্পর্শে না আসতে পারে। ইতালির সব শহরের প্রবেশদ্বারে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এক শহর থেকে অন্য শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কেউ এই নিয়ম বা আইন অমান্য করলে তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
ইতালির বিভিন্ন শহরের বসবাসরত প্রায় ২ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি আতঙ্কের সঙ্গে বাস করছে। বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এ মুহূর্তে দেশে গমন করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে সরকার ঘোষিত আইন মেনে চলতে বলা হয়। প্রবাসী কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ১৫০০ ও ১২২ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply