দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় আমিনুল ইসলাম (৩৩) নামে প্রবাসী এক বাংলাদেশি মারা গেছেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাতে দেশটির রাজধানী সিউলের পার্শ্ববর্তী ছুংছন শহরের বোকদো ওমসং নামক এলাকায় মারা যান তিনি। ঘুমন্ত অবস্থায় মারা গেলেও ওই প্রবাসীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি।
আমিনুল ইসলামের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছিল। আজ রোববার বিকেল ৩টায় তার লাশ বাংলাদেশ বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
প্রবাসী আমিরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা রামারবাগের মো. মোস্তফার ছেলে। সর্বশেষ গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ২টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসার পোস্ট শেয়ার করেছিলেন ওই প্রবাসী।
জানা যায়, আমিনুল ইসলাম ইপিএস কর্মী হিসেবে গত ৬ বছর পূর্বে দক্ষিণ কোরিয়াতে আসেন। তিনি গাড়ির বডি তৈরির কোম্পানি আলকো ফানেলে কর্মরত ছিলেন। সেখানে আটজন বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন।
আমিনুল ইসলামের সহকর্মী সামাদ সিকদার বলেন, আমিনুল ইসলাম অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ ছিলেন। তার তেমন কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না এবং তিনি শনিবার সারা দিন সুস্থভাবে কোম্পানিতে কাজ করেছেন।
বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, দূতাবাসের শ্রম উইং থেকে প্রতিনিধিদল মৃত আমিনুল ইসলামের কোম্পানি পরিদর্শনসহ লাশ দেশে পাঠানোর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী আমিনুল ইসলামের ভাগিনা মো. রাসেল বলেন, ‘প্রবাস জীবনের কষ্টের ফসল দেশে এসে দেখে যেতে পারল না আমার মামা।’
এদিকে, এই রেমিটেন্স যোদ্ধার আকস্মিক মৃত্যুতে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, বিগত বছরগুলোতে অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী অকালে মৃত্যুবরণ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়াতে। কেউ স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকে আবার কেউবা দুর্ঘটনায়। তবে
যারা মারা গেছে তাদের শারীরিক কোনো সমস্যা ছিল না এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাতে ঘুমানোর পর সকালে আর ঘুম থেকে উঠতে পারেননি তারা। এমতাবস্তায় দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যে একটাই প্রশ্ন, কেন এমন হচ্ছে?
শুধু বাংলাদেশিদের মধ্যে নয়, দক্ষিণ কোরিয়াতে অবস্থানরত সকল বিদেশিদের মধ্যে এটা বর্তমানে সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে দূতাবাসসহ বাংলাদেশের সংগঠনগুলো বিভিন্ন স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং লাইভ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
Leave a Reply