মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে ১৬ বছর পলাতক থাকার পর অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন মো. জসিম উদ্দিন (৪২) নামে এক ব্যক্তি। ১৮ বছর আগে ২০০৪ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের এক হত্যা মামলায় তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়।
ওই মামলায় এতদিন ধরে পলাতক থাকার পর গতকাল রোববার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমানের নেতৃত্বে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ভোলাইল থেকে জসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি মশিউর রহমান দৈনিক আমাদের সময়কে জানান, ২০০৪ সালের ২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় কাশেম নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে জসিম ও তার সঙ্গীরা। ওই ঘটনায় জড়িত জসিমসহ অন্যদের নামে তৎকালীন সময়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের স্ত্রী রেজিয়া বেগম।
এদিকে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন জসিম। তার অনুপস্থিতেই ২০০৬ সালের ৫ মে মামলাটির বিচারকার্য শেষ করে জসিমকে মৃত্যু এবং অর্থ উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করেন তৎকালীন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আব্দুল মান্নান।
ওসি বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জসীম উদ্দিন পলাতক থাকায় তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনার পর থেকে সে দেশের বিভিন্ন স্থানে গা ঢাকা দিয়ে থাকে। যার কারণে তাকে গ্রেপ্তারও করা যাচ্ছিল না। বহু বছর তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি পড়ে ছিল। মাসখানেক আগে বিষয়টি আমার নজরে পড়ে। এত আগের একটি মামলা এবং আসামি দীর্ঘদিন থেকে পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি এত সহজ ছিল না। পরবর্তী সময়ে আমি আমার পুলিশ সুপারের নির্দেশে আসামি জসিমকে গ্রেপ্তারে কাজ শুরু করি। প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আদমজী এলাকায় তার খোঁজ জানার চেষ্টা করি।’
এত বছর আগের ঘটনা হওয়ায় এবং সে পলাতক থাকায় তেমন কোন তথ্যই পাওয়া যাচ্ছিল না উল্লেখ করে ওসি আরও বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হই। সেসব তথ্য নিয়ে তাকে খোঁজার চেষ্টা করি। একপর্যায়ে আমরা জানতে পারি জসিম কুমিল্লায় তার গ্রামে অবস্থান করছে এবং সে সেখানে সিএনজি অটোরিকশার চালক হিসেবে কর্মরত আছে। আমরা দ্রুত সেখানে চলে যাই এবং তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’
ওই ঘটনায় জসিম ছাড়াও হুমায়ুন নামে আরেক আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আদালত। হুমায়ুন বর্তমানে জেল হাজতে আছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply