সিঙ্গাপুরে আরও এক বাংলাদেশি প্রবাসী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট পাঁচ বাংলাদেশি নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলেন।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে চ্যানেল নিউজ এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার সিঙ্গাপুরে নতুন করে আরও পাঁচজনকে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন দেশটির গ্রেস অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। একজন সেলেটার অ্যারোস্পেস হেইটস নির্মাণাধীন স্থাপনায় কর্মরত ছিলেন।
শনিবার নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২৬ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশির সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পাসধারী। সম্প্রতি চীন সফরের ইতিহাস নেই তার। তবে এর আগে সিঙ্গাপুরে যে চার বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন; তাদের সঙ্গে সেলেটার অ্যারোস্পেস হেইটসের নির্মাণাধীন স্থাপনায় কাজ করতেন নতুন করে আক্রান্ত ওই বাংলাদেশি।
নতুন করে পাঁচজনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করায় দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭২ জনে। দেশটির হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন এক রোগী সুস্থ হয়ে শনিবার বাসায় ফিরে গেছেন।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ১৮ জন চিকিৎসা শেষে পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। তাদের সবাইকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া এখনও আর ৫৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের অনেকের অবস্থা স্থিতিশীল অথবা উন্নতির দিকে। তবে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
এর আগে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরে প্রথমবারের মতো ৩৯ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি প্রবাসীকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি ওই প্রবাসী সিঙ্গাপুরের এনসিআইডির আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর একদিন পর ১১ ফেব্রুয়ারি সেলেটার অ্যারোস্পেস হেইটসের নির্মাণাধীন স্থাপনায় কর্মরত আরও এক বাংলাদেশির শরীরে করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।
পরে ১৩ ফেব্রুয়ারি ৩৭ ও ৩০ বছর বয়সী আরও দুই বাংলাদেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানায় সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সিঙ্গাপুরের ওয়ার্ক পাসধারী এ দুই বাংলাদেশিও সেলেটার অ্যারোস্পেসে কর্মরত ছিলেন।
গত ডিসেম্বরে চীনে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়।
শুক্রবার দেশটিতে নতুন করে আরও ২ হাজার ৬৪১ জনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর ফলে চীনে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ হাজার ৪৯২ জনে পৌঁছেছে। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে হংকং, ফিলিপাইন ও জাপানে একজন করে মোট তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। শনিবার এশিয়ার বাইরে ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে চীনা এক নারী পর্যটক করোনায় মারা যাওয়ায় সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ জনে।
চীনা কর্তৃপক্ষ বলছে, মরণঘাতী এই প্রাদুর্ভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়ার সময় অন্তত ১ হাজার ৭১৬ মেডিকেল কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়া করোনায় সংক্রমিত হয়ে অন্তত ছয়জন চিকিৎসকও প্রাণ হারিয়েছেন। সিঙ্গাপুর, জাপান, থাইল্যান্ড, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র-সহ বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস।
Leave a Reply