ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের একজন ওয়াসার মড্স জোন ৮-এর সাময়িক বরখাস্ত নির্বাহী প্রকৌশলী অসীম কুমার ঘোষ এবং অন্যজন ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে ওএসডি) কাজী খায়রুল বাশার। তারা স্ত্রী ও মেয়ের নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে ওয়াসার ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ, ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ, গোপন নথি পছন্দের ঠিকাদারের কাছে তুলে দেওয়া এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়াসার নিজস্ব তদন্তে অভিযোগগুলো প্রমাণিতও হয়েছে। অসীম কুমার ও খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ জমা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক)। কমিশনের যাচাই-বাছাই শাখা অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য শিগগিরই কমিশনে উপস্থাপন করবে বলে দুদকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রকৌশলী অসীম কুমার ১৯৯৭ সালে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ঢাকা ওয়াসায় যোগ দিয়ে বর্তমানে পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তা। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যহার করে ঘুষ-দুর্নীতি ও নিজের স্ত্রী ঝর্ণা রানী ঘোষের নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। দুদকে দেওয়া অভিযোগ অনুসারে অসীম ও তার স্ত্রীর ঢাকায় ১৩ বাড়ি ও প্লট রয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও বসুন্ধরা রিভার ভিউ প্রকল্পে ৮টি প্লট এবং আশুলিয়া গ্রিন মডেল টাউন ও কেরানীগঞ্জে তিনটি বাড়ি রয়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ হাউজিং এলাকায় বাড়ি নং-১, সেকশন-২, ব্লক-ডি নম্বর বাড়িতে ফ্ল্যাট ও সলিমুল্লাহ রোডে ফ্ল্যাট আছে। তিনি একজন সরকারি কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও চাকরির বিধিমালা লঙ্ঘন করে কন্যা প্রমি কুমার ঘোষের নামে প্রমি এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। যার স্বত্বাধিকারী অসীম কুমারের স্ত্রী ঝর্ণা রানী। এ ছাড়া তার আরও একাধিক বেনামি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি পায়রাবন্দরে ওরিয়ন গ্রুপের সঙ্গে বিভিন্ন সাব-কন্ট্রাকে ঠিকাদারি কাজ করেন। নিজ ঠিকাদারি কাজে ব্যস্ত থেকে ঠিকমতো অফিস করেন না।
২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অসীম কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে ওয়াসার এমডি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর শাহনাজ পারভীন মিতু। সেখানে তাকে দপ্তরে না পাওয়া, এলাকার জনসাধারণের অভিযোগ না শোনা, কাউন্সিলরসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে মোবাইল ফোনে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।
অনুসন্ধান ও ওয়াসার নিজস্ব তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অসীম কুমার ঘোষ ঢাকা ওয়াসার মড্স জোন-৮ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪০ লাখ টাকার বিভিন্ন মেরামত ও সংস্কারকাজের ঠিকাদারের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে নিজেই ঠিকাদারের ভূমিকায় ছিলেন। কিছু ক্ষেত্রে কাজ না করেই বিল তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ কারণে ২০১৭ সালের ২০ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের আদেশে বলা হয়- ‘২০০৮ সাল থেকে ব্যবহৃত বিভিন্ন বিল রেজিস্ট্রিতে অসৎ উদ্দেশ্যে কার্যাদেশ নম্বর বাদ দিয়ে এন্ট্রি করতে সংশ্লিষ্ট ইউডিকে জোরপূর্বক বাধ্য করেন। তিনি ২-৩ ট্রাক মাটি ফেলে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের নামে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার বিল তুলে নেন। তিনি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাম্প মেরামতের নামেও বিল তুলে নেন। বিনা অনুমতিতে বিদেশে অবস্থান করা সত্ত্বেও মেজারমেন্ট বহিতে স্বাক্ষর করেন। চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থী নানা কাজের জন্য তাকে ঢাকা ওয়াসা থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অসীমের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন ঠিকাদার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কাছে। অভিযোগ অনুযায়ী, খিলবাড়িরটেক পানির পাম্প হাউসের সীমানাপ্রাচীর ও রঙের কাজ করিয়ে শাহানা অ্যান্ড কোং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা, মেহেদী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মড্স জোন ৮-এর অফিস কম্পাউন্ডের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের জন্য দেড় লাখ টাকা, হাজিপাড়া পেট্রলপাম্প হাউসের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ৯০ হাজার টাকা, বিপ্লব ট্রেডার্সের কাছ থেকে ওয়াসার মড্স জোন-৮ সংস্কার মেরামত ও রঙের কাজে এক লাখ টাকা ঘুষ নেন। মড্স জোন ৮-এর অফিস ভবন মেরামত, সংরক্ষণ ও রঙ বাবদ ৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা কাজ না করেই তুলে নেন। মড্স জোন ৮-এর পাম্প হাউসের মেরামত ও সংস্কারের ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, মড্স জোন ৮-এর ডিএমএ সøুইসগেটে বালু চেম্বার খুঁজে বের করা ও মেরামতের কাজের ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বোসান ইন্টারন্যাশালের কাছ থেকে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, মড্স জোন-৮ থেকে বরিশাল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকার কাজে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আছে। অভিযোগগুলো ওয়াসার নিজস্ব তদন্তে প্রমাণিত হয়।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী অসীম কুমার ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করা হয়। তবে প্রতিবেদক তাকে প্রশ্ন করার পর তিনি অসীম কুমার ঘোষ নন জানিয়ে ফোন রেখে দেন। এর পর তার ব্যবহৃত অন্য একটি নম্বরে অনেকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরিচয় জানিয়ে এসএমএস পাঠালেও সাড়া দেননি।
নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার ১৯৯৭ সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ঢাকা ওয়াসায় নিয়োগ পান। বর্তমানে তিনি ঢাকা ওয়াসায় পঞ্চম গ্রেডে কর্মরত। তার বিরুদ্ধেও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। খায়রুল বাশার তার স্ত্রী ইশরাত জাহান উর্মি ও মা বিলকিস আহমেদের মালিকানায় ম্যাক কনসোর্টিয়াম নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খোলেন। সরকারি দপ্তরের একজন কর্মচারী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে তিনি ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নিজের ও স্ত্রীর নামে তিনটি প্লটের মালিক তিনি। এ ছাড়া ঢাকার মিরপুরে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও রাজধানীর নাখালপাড়ায় বাড়ি করেছেন। ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি মালয়েশিয়ায় ‘সেকেন্ড হোম’ তৈরি করেছেন।
অভিযোগের বিবরণ অনুযায়ী, খায়রুল বাশারের ম্যাক কনসোর্টিয়াম ওয়াসার অন্তত ১০ শতাংশ ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। তার ব্যবসায়িক পার্টনার মতিউর রহমান। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ২০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৮ সালে ম্যাক কনসোর্টিয়াম সর্বনিম্ন দরদাতা না হয়েও ৮টি পানির পাম্পের জন্য দুটি গ্যাস জেনারেটর সরবরাহের ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকার কাজ বাগিয়ে নেয়। ওয়াসার সংগ্রহ বিভাগের অধীনে ২০০ কেবিএ ডিজেল জেনারেটর কিনতে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার কাজ করে ম্যাক কনসোর্টিয়াম। ওয়াসার বিভিন্ন আকৃতির মিটার ক্রয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ম্যাক কনসোর্টিয়াম। ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের জন্য ২৫ কিউসেকের পানির পাম্প সরবরাহের নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। তারা রাজধানীর বিভিন্ন বড় পানির পাম্প স্থাপন ও সরবরাহে অন্য ঠিকাদারদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে দুই থেকে তিন গুণ দাম হাঁকিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। ঢাকা ওয়াসার পয়ঃনির্মাণ ও ড্রেনেজ বিভাগের আওতায় ডাম্পিং ট্রাক সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ম্যাক কনসোর্টিয়াম। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি পুরো রাজধানীতে ম্যানহোলের জন্য নিম্নমানের প্লাস্টিকের ঢাকনা সরবরাহ করে। আগে ওয়াসার ম্যানহোলের ঢাকনা ছিল স্টেইনলেস স্টিলের বা ইস্পাতের তৈরি মজবুত। সেগুলোর পরিবর্তে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিম্নমানের প্লাস্টিকের ঢাকনা দেওয়া হয়।
খায়রুল বাশার নিজ ঠিকাদারি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ঠিকমতো অফিসে সময় দেন না। তিনি অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঊর্ধ্বতন ও অধস্তনদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। তার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই বিভাগীয় মামলা করে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর খায়রুল বাশারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ওয়াসার এমডি। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক একেএম সহিদ উদ্দিন একটি এইচডিডি মেশিন বিনা অনুমতিতে গ্রহণ করার বিষয়ে জানতে চান নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশারের কাছে। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে প্রকল্প পরিচালককে গালাগাল করেন এবং হাতে থাকা ফাইল ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলেন। কক্ষে রাখা নথিপত্র প্রকল্প পরিচালকের মুখে ছুড়ে মেরে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। টেবিল চাপড়ে প্রকল্প থেকে পরিচালককে বিদায় করার হুমকি দেন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অভিযোগের পর ওয়াসার একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- কাজী খায়রুল বাশার ঢাকা এনভায়রমেন্ট সাসটেইনেবল ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্টের ডিজাইন বিল্ড অপারেট প্যাকেজে দাখিল করা চূড়ান্ত যান্ত্রিক ইভালুয়েশন কালে দুর্নীতির আশ্রয় নেন। তিনি প্রকল্পের পরিচালকসহ অন্যদের মতামত অগ্রাহ্য করে নিজেই অবজারভেশন নথি তৈরি করেন। তিনি যোগসাজশ করে অন্য ঠিকাদারের কাছে গোপন নথি তুলে দেন। এ বিষয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলে। পরে ওয়াসার এক চিঠিতে তাকে বলা হয় ঠিকাদারের কাছে তথ্য পাচারের কাজগুলো ছিল এডিবির অ্যান্টি করাপশন পলিসি ও ন্যায়পরায়ণতা নীতিমালাবিরোধী। চিঠিতে আরও বলা হয়, কাজী খায়রুল বাশার দরপত্রে অংশ নেওয়া মূল্যায়ন প্রতিবেদন বিডার ১-এর নথি বিডার ৭-এর হাতে তুলে দেন। এতে প্রকল্পটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর বিনিময়ে তিনি ঠিকাদারের কাছ থেকে ৪০ শতাংশ লভ্যাংশ নেন।
ঘুষ-দুর্নীতির ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মধ্যে প্রাপ্ত অর্থ কাজী খায়রুল বাশার মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন। তিনি মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে সেকেন্ড হোম তৈরি করছেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার সোনাডাঙ্গায় বিপুল পরিমাণ জমি কিনেছেন। এ ছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা চৌরাস্তা মূল সড়কের পাশে ১৪ বিঘা বাণিজ্যিক জমি কিনেছেন। সেখানে তিনি বাগানবাড়ি ও মাছের ঘের করেছেন। এই জমির বিষয়টি তার আয়কর নথিতে উল্লেখ নেই।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী খায়রুল বাশার বলেন, আমি দুই বছর আগে ওয়াসার চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান রিজাইন লেটার গ্রহণ করেননি। আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা। তিনি উল্টো ওয়াসার এমডিকে বড় দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে বলেন, সেই দুর্নীতি ঢাকার জন্য, অর্থাৎ শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমডি একজন নাটকবাজ। একটা কিছু করে চোখ অন্যদিকে ফেরাচ্ছেন। এ জন্য অনেক বিনিয়োগও করেছেন।
Leave a Reply