ইতিহাসখ্যাত তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ঐতিহাসিক স্থাপনা আয়া সোফিয়া আবার মসজিদরূপে ফিরে পেল। খুলে গেল আল্লাহর রহমতের দরজা। ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে গর্জে উঠল এর মিহরাব ও মিনার। আল্লøাহু আকবার ধ্বনিতে অনুগত বান্দার আবেগঘন পবিত্র সিজদার স্পর্শ পেল এর মেঝে এবং আশপাশের বাগান ও রাস্তা। তুরস্কের উচ্চ আদালতের রায়ের পর গত ২৪ জুলাই জুমার নামাজের মাধ্যমে ৮৬ বছর পর এ মসজিদ আবার নামাজ আদায়ের জন্য উন্মুক্ত হলো।
মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়ই প্রমাণ করে, এ মসজিদ মুসল্লিদের কত আকাক্সক্ষার ছিল। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হৃদয়ের কথা পড়তে পেরে তাই তো ইস্তাম্বুলের গভর্নর আলী ইয়েলিকায়ায় বলেন, ‘জুমার নামাজ আদায়ে সবাই বেশ রোমাঞ্চিত’। ১৯৩৪ সালে সেকুলার প্রেসিডেন্ট কামাল আতাতুর্ক ঐতিহ্যবাহী আয়া সোফিয়া মসজিদকে জাদুঘরে রূপান্তর করে আসলে মসজিদটির চরম অবমাননা করেছিলেন। গত ১০ জুলাই উচ্চ আদালত রায় দেন, আয়া সোফিয়াকে মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করাই হবে বৈধ কাজ। আদালত জাদুঘর হিসেবে এর মর্যাদা বাতিল করে দিয়েছেন। আয়া সোফিয়াকে আবার মসজিদে রূপান্তরের ঘোষণায় আমেরিকা, রাশিয়াসহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশ এর কঠোর সমালোচনা ও প্রতিবাদ করে। অনেকে একে মসজিদে রূপান্তর না করার আহ্বান জানায়। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান এগুলোর কোনো তোয়াক্কা না করে ২৪ জুলাই থেকে জুমার নামাজের মাধ্যমে এখানে নামাজ চালু করে দেন। এতে দেশটির ইসলামপন্থীরা ভীষণ খুশি। বিবিসির তথ্যমতে, ২৪ জুলাইয়ের জুমার নামাজে মসজিদের ভেতর নামাজ পড়েছেন প্রায় এক হাজার মুসল্লি। আর বাইরে বাগান ও রাস্তায় ছিলেন আরো অসংখ্য মানুষ। আয়া সোফিয়াকে মসজিদ রূপান্তর করায় ইউরোপ এতটাই নাখোশ হয়েছে যে, গ্রিসে ২৪ জুলাই জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
আয়া সোফিয়া শুধুই একটি মসজিদ নয়, বরং এটি একটি ইতিহাস। এ ইতিহাস মুসলমানদের জন্য গৌরবের। আজ আবার যখন একে মসজিদে রূপান্তর করা হলো খ্রিষ্টজগতে তখন বেদনা যেন আবার জেগে উঠল। এ দেশেও এক শ্রেণীর মানুষ আছে, যারা আয়া সোফিয়ার ইতিহাসকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন। আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের ঐতিহাসিক রায়ের পর এ দেশের একটি পত্রিকা অনলাইনে শিরোনাম করে- প্রসিদ্ধ জাদুঘরকে মসজিদে রূপান্তর। যারা ইতিহাস জানে না, তাদের যে কেউ এ শিরোনাম দেখে ভাববে, আয়া সোফিয়া আগাগোড়াই একটি বিশ্বখ্যাত জাদুঘর ছিল। এখন তাকে মসজিদে রূপান্তর করা হলো। অথচ আয়া সোফিয়া এর আগে প্রায় ৫০০ বছর মসজিদ ছিল।
ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া স্থাপনাটি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত। ৩২৪ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট কন্সটান্টাইনের নামে এর নামকরণ করা হয় কন্সটান্টিনোপল যা ৩৩০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১১০০ বছর পর্যন্ত পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। একটি সাম্রাজ্য ছিল পশ্চিমে। এর রাজধানী ছিল ইতালির রোমে। এদের ধর্মীয় নেতাকে পোপ বলা হয়। অপর সাম্রাজ্য ছিল প্রাচ্যে। এর রাজধানী ছিল কন্সটান্টিনোপল। এদের ধর্মীয় নেতাকে প্যাট্রিয়ার্ক বলা হতো। পশ্চিমে রোমান সাম্রাজ্যের বিলুপ্তির পর এ সাম্রাজ্য কন্সটান্টিনোপলে বলবৎ থাকে দীর্ঘকাল। কুসতানতিনিয়া শব্দটি প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সা:-এর পবিত্র বাণীতেও উল্লেখ রয়েছে। রাসূলুল্লøাহ সা:-এর আগমন হয়েছে মানুষকে মানুষের গোলামি থেকে মুক্ত করতে। পৃথিবীতে কেউ কারো গোলাম নয়, সবাই এক আল্লাহর গোলাম। রাসূলুল্লাহ সা: তৎকালীন রোম সাম্রাজ্যে নিপীড়িত মানবতাকে মুক্তি দিয়ে মহান আল্লাহর একত্ববাদের আলো ছড়িয়ে দিতে বিজয়ের সুসংবাদ দেন খন্দকের যুদ্ধের সময়। এরপর তিনি ঐতিহাসিক সুসংবাদ দেন- ‘অবশ্যই তোমরা কুসতুনতুনিয়া (কন্সটান্টিনোপল) বিজয় করবে। কতই না উত্তম আমির এই অভিযানের আমির এবং কতই না উত্তম বাহিনী এই বাহিনী’ (মুসনাদে আহমদ)।
হজরত মুআবিয়া রা:-এর খেলাফতকালে রোম সাম্রাজ্য ইসলামী দুনিয়ার সীমানায় এসে আক্রমণ ও লুটতরাজ শুরু করে। তখন তিনি এ হাদিসকে সামনে রেখে কন্সটান্টিপোলে ইসলামের ঝাণ্ডা শুধু উত্তোলন নয়, বরং এর দণ্ড প্রোথিত করার কামনা প্রকাশ করেন। এ কামনাকে বাস্তবায়নের জন্য তিনি সর্বপ্রথম ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়ার নেতৃত্বে ৬৭৪ খ্রিষ্টাব্দে রোম সাম্রাজ্য বিজয়ের অভিযান পরিচালনা করেন। এ যুদ্ধে অনেক বড় বড় সাহাবি অংশগ্রহণ করেছেন। তন্মধ্যে হজরত আবু আইউব আনসারি রা:ও ছিলেন। ওই যুদ্ধে তিনি অসুস্থ হয়ে ইন্তেকাল করেন। এর আগে তিনি ইয়াজিদকে বলেন, মারা গেলে আমার লাশ নিয়ে তোমরা কুসতুনতুনিয়ার দিকে শত্র“সীমানার যত ভেতরে পারো পৌঁছে যাবে এবং ওখানে আমাকে দাফন করবে। তার ইন্তেকাল হলে তাই করা হলো এবং তাকে কন্সটান্টিনোপলের প্রাচীরের পাশে দাফন করা হলো। এটি ছিল রোম বিজয়ের প্রথম ধাপ। এ অভিযানে পূর্ণ সফলতা অর্জিত হয়নি। রাসূলুল্লাহ সা:-এর হাদিসকে সামনে রেখে পরবর্তী প্রায় ৮০০ বছর আরো অনেক অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অবশেষে ১৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দে উসমানিয়া খেলাফতের সপ্তম সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ মাত্র ২১ বছর বয়সে দুর্গম কন্সটান্টিনোপল বিজয় করে রা:-এর সুসংবাদ বাস্তবায়ন করেন। তিনি এর সুদৃঢ় প্রাচীরে হজরত মুআবিয়া রা:-এর আকাঙ্ক্ষা মোতাবেক ইসলামের ঝাণ্ডাদণ্ড প্রোথিত করেছেন। কন্সটান্টিনোপল বিজয় করার কারণে তিনি ‘ফাতিহ’ (বিজেতা) উপাধিতে ভূষিত হন।
সুলতান মুহাম্মদ ফাতিহ কন্সটান্টিনোপল বিজয় করে এর নাম রাখেন ইসলামবুল (ইসলামের শহর)। একে ইসতানবুলও বলা হয়ে থাকে। তবে এটা ইসতানবুল নামেই সমধিক পরিচিতি লাভ করেছে। এ কারণে ইসতানবুল লেখা হলেও নিয়মমাফিক এর উচ্চারণ হয় ইস্তাম্বুল। এই ইস্তাম্বুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থাপনা আয়া সোফিয়া। এর অর্থ পবিত্র জ্ঞান। রোমান Hagia (হাজিয়া, কেউ বলে হাগিয়া)-কে তুর্কিতে আয়া বলা হয়। বাইজেন্টাইন সম্রাট কন্সটান্টিয়াস ৩৬০ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম আয়া সোফিয়া নির্মাণ করেন। তখন এর ছাদ ছিল কাঠের। ৪০৪ খিষ্টাব্দে রাজনৈতিক কলহের জেরে এ ছাদ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ৪১৫ খিষ্টাব্দে সম্রাট থিওডোসিওস আবার আয়া সোফিয়া নির্মাণ করেন। তখনো এর ছাদ ছিল কাঠের তৈরি। প্রজাদের বিদ্রোহের আগুনে ১০০ বছর পর আয়া সোফিয়া আবারো আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এরপর সম্রাট জাস্টিনিয়ান ৫৩২ খ্রিষ্টাব্দে সম্পূর্ণ নতুনভাবে আয়া সোফিয়া নির্মাণের আদেশ দেন। দীর্ঘ সময় ব্যয় করে অবশেষে তৃতীয়বার ৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে আয়া সোফিয়া নির্মিত হয়। সৌন্দর্য ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের এই স্থাপত্যটি সেই থেকে আজ অবধি স্বমহিমায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। খ্রিষ্টান বিশ্ব রোমান ক্যাথলিক ও অর্থোডক্স দুটি দলে বিভক্ত ছিল। ৫৩৭ থেকে ১৪৫৩ খিষ্টাব্দ পর্যন্ত আয়া সোফিয়া ছিল অর্থোডক্সদের গির্জা ও বিশ্বকেন্দ্র এবং খ্রিষ্টান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় কেন্দ্র। মাঝখানে ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে চতুর্থ ক্রুসেড যুদ্ধের মাধ্যমে ইউরোপের ক্যাথলিকরা এটা দখল করে নেয় এবং ক্যাথলিক গির্জায় রূপান্তর করে। ১২৬১ খ্রিষ্টাব্দে ক্যাথলিকদের পরাজয়ের পর আবার এটা অর্থোডক্স গির্জায় রূপান্তরিত হয়। ১৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দে যুদ্ধের আগে সুলতান মুহাম্মদ ফাতিহ প্রথমে সন্ধির প্রস্তাব দেন। প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় অবশেষে যুদ্ধের মাধ্যমে কন্সটান্টিনোপল বিজিত হয়। বিজয়ের পর বিজয়ী মুসলিম বাহিনী প্রথমবারের মতো আয়া সোফিয়া গির্জাতে নামাজ আদায় করেন।
আয়া সোফিয়া কেন্দ্রিক ভ্রান্ত আকিদাগুলো মুছে ফেলতে সুলতান মুহাম্মদ ফাতিহ এটিকে মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই আয়া সোফিয়াকে গির্জা থেকে মসজিদে রূপান্তর করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে, খ্রিষ্টান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিজের অর্থ দিয়ে আয়া সোফিয়া ক্রয় করে নেন। এরপর একটি ওয়াকফ অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে আয়া সোফিয়াকে এর মালিকানায় হস্তান্তর করেন। এর বিখ্যাত দলিল আজো আঙ্কারার টার্কিশ ডকুমেন্ট অ্যান্ড আর্গুমেন্ট ডিপার্টমেন্টে সংরক্ষিত আছে। ‘আয়া সোফিয়া’ নামে কোনো সমস্যা না থাকায় এর নামে পরিবর্তন আনা হয়নি। এর স্থাপত্যশৈলীতেও তেমন পরিবর্তন আনা হয়নি। শুধু এর দেয়াল ও মেঝেতে যেসব খ্রিষ্টীয় প্রতীক ছিল, সেগুলো কুরআনের বাণী সংবলিত ইসলামী লিপি-নকশা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। পশ্চিম দেয়ালে স্থাপন করা হয় মিহরাব, যা মসজিদের অপরিহার্য অংশ। আর এ স্থাপত্যকে ঘিরে চারদিকে চারটি সুউচ্চ মিনার নির্মাণ করা হয়। এগুলো থেকে আজানের ধ্বনি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ত। গত ২৪ জুলাই এ চারটি মিনার থেকে একযোগে আজান ধ্বনিত হয়েছে। এটি জামে আয়া সোফিয়া নামে খ্যাতি লাভ করে। এভাবে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত ৪৮১ বছর এটি মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর তুরস্কে উসমানি খেলাফত ভেঙে যায়। এরপর ইসলামবিদ্বেষী কামাল আতাতুর্ক ১৯৩৪ সালে ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া মসজিদের মর্যাদা ছিনিয়ে নিয়ে একে জাদুঘরে রূপান্তর করে বিশ্বের বুকে এক মন্দ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ৮৬ বছর পর ২০২০ সালের ১০ জুলাই আয়া সোফিয়া তার হারানো রূপ ফিরে পায় এবং ২৪ জুলাই আবার সেখানে নিয়মিত নামাজ শুরু হয়। ওই দিন জুমার নামাজে ঐতিহাসিক খুতবা দেন তুরস্কের ধর্মমন্ত্রী প্রফেসর ড. আলী আব্বাস এরবাশ। তিনি তার খুতবায় আয়া সোফিয়ার গুরুত্ব, ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ওয়াকফকৃত সম্পদে কারো হস্তক্ষেপ বৈধ নয়। আয়া সোফিয়া গোটা মুসলিম উম্মাহর সম্পদ। তিনি আরো বলেছেন, যে মসজিদের মিনার থেকে আজানের ধ্বনি ভেসে আসে না, যে মসজিদের মিম্বরে কেউ আরোহণ করে না, যে গম্বুজের নিচে গুণ গুণ আওয়াজ উঠে না, যে মসজিদের আঙ্গিনায় মুসল্লিদের পদচারণা হয় নাÑ তার চেয়ে কষ্টদায়ক দৃশ্য এই জগতে আর কী হতে পারে? ইসলামবিদ্বেষীদের রোষানলে দুনিয়ার আনাচে-কানাচে আজ বহু মসজিদের দরজায় তালা ঝুলছে।
বিশ্বে খ্রিষ্টান কর্তৃক আয়া সোফিয়াসহ বিভিন্ন গির্জা বিক্রয়ের অনেক উদাহরণ রয়েছে। এখনো সে ধারা অব্যাহত রয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ায় বহু গির্জা মসজিদ কমিটির কাছে বিক্রি করা হয়েছে। ব্রিটেনে অসংখ্য গির্জা এখন বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন প্রদর্শনীর জন্য ভাড়া দেয়া হচ্ছে। পক্ষান্তরে কোনো স্থানকে মসজিদ বানানো হলে, কোনো কারণে তা ব্যবহৃত না হলেও কিয়ামত পর্যন্ত তা মসজিদ হিসেবেই সংরক্ষণ করতে হবে। এর বিক্রয় কিংবা অন্য কোনো কাজে এর বিকল্প ব্যবহার করা যায় না। কোনোভাবে এর পবিত্রতা ক্ষুণ্ন করা যাবে না। গির্জা ও মসজিদের পার্থক্যটা এখানেই। সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ আয়া সোফিয়া খ্রিষ্টানদের কাছ থেকে ক্রয় করে মসজিদের জন্য তা ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন। আর ইসলামবিদ্বেষী কামাল পাশা সেই মসজিদ চলমান বা সংরক্ষিত না রেখে মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করে তাকে জাদুঘরে রূপান্তর করে চরম বৈরী আচরণ প্রকাশ করেন। ৮৬ বছর পর এরদোগান আবার সেই মসজিদের পবিত্রতা ফিরিয়ে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। আজ আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরে যারা বিলাপ করছেন, স্পেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন শত শত মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে তখন তারা কি বিলাপ করেছেন? স্পেনকে ইসলাম ও মুসলমান শূন্য করার পর বহু ঐতিহ্যবাহী মসজিদকে জাদুঘর ও গির্জা, ঘোড়ার আস্তাবল এমনকি, অশ্লীলতার আড্ডাখানা বানানো হয়েছে।
গ্রিস ও সার্বিয়াতেও অনেক মসজিদকে গির্জায় রূপান্তর করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে কোনো হইচই নেই। বাবরি মসজিদকে অন্যায়ভাবে ভেঙে দিয়ে সেখানে রামমন্দির নির্মাণের অবৈধ রায় দেয়া হয়েছে। তখন এসব মানুষ কোনো প্রতিবাদ করেননি। ইউরোপ আমেরিকাসহ মুক্তমনা ও সভ্যতার দাবিদাররা মসজিদের স্থানে মন্দির নির্মাণে কোনো বাধা দেয়নি। ৮৬ বছর পর আয়া সোফিয়ায় আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিয়ে রহমতের দরজা খুলে যাওয়ায় সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে আশার আলো জেগে উঠেছে। আয়া সোফিয়ার মতো বিশ্বের সব মজলুম মসজিদে আবারো আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারিত হোক, খুলে যাক রহমতের দরজা।
লেখক : গবেষক ও অনুবাদক
Leave a Reply