প্রতিরক্ষা আবাসনের একটি বন্ধ ঘর থেকে পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচা-গলা মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি ছিল, সপ্তাহ খানেক আগে মৃত্যু হয়েছিল তার। তবে অবশেষে প্রকাশ হলো অভিনেত্রীর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট। বিস্তারিত রিপোর্টে মিললো বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য!
৯ সপ্তাহ আগে নয়, কমপক্ষে ৮-১০ মাস আগে মারা গিয়েছিলেন হুমাইরা। মৃতদেহে পচন ধরেছিল।
জিও নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, করাচির ওই আবাসনে দীর্ঘ দিন ভাড়া না মেটানোয় অভিনেত্রীর নামে আদালতে মামলা করেছিলেন ফ্ল্যাট মালিক।
সমনের উত্তর না মেলায় ফ্ল্যাটে হানা দেয় পুলিশ। মূল দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকেই দেখা যায়, মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়ে আছে হুমাইরার দেহ। চারপাশে পোকায় ভর্তি মৃতদেহ একেবারে পচে গলে গিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, শুধু মূল দরজা নয়, ফ্ল্যাটের বারান্দার দরজাও ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ফলে বাইরে থেকে কেউ ঢুকে খুন করেছেন, এমন সন্দেহ প্রথমেই উড়িয়ে দেওয়া হয়।
তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, হুমাইরার অস্থিমজ্জা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
মস্তিষ্ক পচে গেছে, দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কালো হয়ে গেছে। আঙুল ও নখের কোনও চিহ্ন নেই, মাংস গলে বেরিয়ে এসেছে হাড়। মেরুদণ্ডের হাড় থাকলেও সুষুম্না নাড়ির অস্তিত্ব নেই। হাড়ের ওপর কালো চামড়ার স্তর ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই। চুলে বাদামি রঙের পোকা পাওয়া গেলেও কোনো কীটপতঙ্গের লার্ভা (ম্যাগট) পাওয়া যায়নি বলেও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পচনের স্তর এতটাই চরম পর্যায়ে ছিল যে মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণ নির্ধারণ বর্তমানে অসম্ভব। তবে ডিএনএ পরীক্ষা ও টক্সিকোলজিক্যাল বিশ্লেষণ চলছে। যেগুলো থেকে পরবর্তীতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া, চুল, কাপড় ও রক্তের নমুনা রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৃতদেহে বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। কোনও হাড়ও ভাঙা নেই। মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের নামকরা বয়োজ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী আয়েশা খানের মৃত্যুর এক মাসের মধ্যেই মডেল-অভিনেত্রী হুমাইরার মৃত্যু ঘটে। ৭৭ বছর বয়সি এ টেলিভিশন অভিনেত্রীর মরদেহও করাচির ফ্ল্যাটে একইভাবে নিঃসঙ্গ অবস্থায় পাওয়া গেছিলো।
Leave a Reply