প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, কাতার সফরে রোহিঙ্গা বিষয়ক এক সেমিনারে নেতৃত্ব দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি ওঠার আগে এই সেমিনারকে তার প্রস্তুতিপর্ব হিসেবে দেখা হচ্ছে। চারদিনের সফরে আজ কাতার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান তিনি।
প্রেস সচিব জানান, সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরায় বিশেষ সাক্ষাৎকার দেবেন। সেখানে ড. ইউনূস রোহিঙ্গা বিষয়ক আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এক সেমিনারে নেতৃত্ব দেবেন। এছাড়াও এলএনজি আমদানি, ভিসা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হবে। কাতারের আমিরের সঙ্গেও সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।
জানা গেছে, চারদিনের এই সফরে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল–থানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে ব্যবসা ও জ্বালানি সহযোগিতার পাশাপাশি ভিসা উন্মুক্ত করা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ।
দোহা থেকে কূটনৈতিক একটি সূত্র জানিয়েছে, ২৩ বা ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ও কাতারের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বৈঠক আয়োজনের প্রস্ততি চলছে।
প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে কারা সঙ্গী হচ্ছেন তা নিয়ে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির আমন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টা এ সফরে যাচ্ছেন। যেখানে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এছাড়াও দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের চারজন জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে কাতারে যাচ্ছেন। এই চার ক্রীড়াবিদ হলেন-ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও শাহেদা আখতার রিপা এবং ক্রিকেটার সুমাইয়া আখতার ও শারমিন সুলতানা।
এদিকে আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫ এর আর্থনার ওয়েবসাইটে দেওয়া অনুযায়ী, দোহায় ২২ ও ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় এবারের আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’। কাতার ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত নীতি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আর্থনা সেন্টার ফর আ সাসটেইনেবল ফিউচার এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক। দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনে কাতারের উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে দেশটির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও অনন্য প্রতিবেশগত বৈচিত্র্যকে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হবে। শীর্ষ সম্মেলন আলোচনার একটি প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করবে, যেখানে প্রথাগত জ্ঞান ও আধুনিক উদ্ভাবনের সমন্বয়ের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের নতুন দিক উন্মোচন এবং এক সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনের উপায়গুলো উঠে আসবে। এই শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করবেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
Leave a Reply