ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনের অবসানের পর রাজনীতিতে ক্রমেই জোরালো হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের ইস্যু। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না থাকলেও বসে নেই রাজনৈতিক দলগুলো। নির্বাচন নিয়ে বহুমুখী বিতর্কের মধ্যেই নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সক্রিয় দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিসহ অন্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ সংসদীয় আসন চষে বেড়াচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জামায়াত বেশিরভাগ আসনে এরই মধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নিজ দলের মধ্যে যেহেতু বিরোধ বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে না, মনোনয়নের ব্যাপারে তারা অনেকটা নিশ্চিত-নির্ভার। এনসিপির এসব নেতা নিজ নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের পক্ষে তাদের সমর্থকরাও জোরেশোরে প্রচারে নেমেছেন।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কালবেলার স্থানীয় প্রতিনিধিরা খবর পাঠিয়েছেন, জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার এবং এনসিপির গণসংযোগ-প্রচার চোখে পড়ার মতো। ভোটারদের মন জয় এবং
দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে তৎপর সবাই।
এদিকে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সরব থাকলেও এখনো নির্বাচনী প্রচারে নামেননি দলটির সম্ভাব্য প্রার্থী বা তাদের সমর্থকরা। তবে তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা কর্মিসভা, উঠান বৈঠক, তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে
সভা-সেমিনারের মাধ্যমে নিজেদের সামর্থ্য ও শক্তিমত্তার জানান দিচ্ছেন। কিন্তু তাদের হয়ে বা তাদের নামে কোনো পোস্টার-ব্যানার কোথাও চোখে পড়েনি। এ নিয়ে দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, তপশিল হলেই তারা মাঠে নামবেন। কারণ, ১৭ বছর ধরে যে আন্দোলন নিয়ে বিএনপি মাঠে ছিল, মানুষের সেই ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনাই এখন তাদের মূল কাজ। বিএনপি এমন কোনো রাজনৈতিক দল নয় যে, আগাম নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে মানুষের নজর কাড়তে হবে। বিএনপি জনমানুষের দল, সাধারণ মানুষই বিএনপির মূল চালিকাশক্তি।
তবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন মাথায় রেখে বিএনপিসহ প্রায় সব দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা গত রমজানজুড়ে ইফতার-রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। ঈদ উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মীসহ নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার দুস্থ, অসহায় মানুষের মাঝে উপহার এবং গরিবদের জন্য
জাকাত-ফিতরা দিয়েছেন। ঈদের পর জেলা-উপজেলায় নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনী এবং বৈশাখী মেলার আয়োজনও করেছেন অনেকে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এরই মধ্যে কয়েকবার বলেছেন, দলগুলো বড় ধরনের সংস্কার চাইলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে আর ছোট আকারের সংস্কার চাইলে নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বরে। কিন্তু ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন আয়োজনের বিরোধী বিএনপি। তারা চলতি বছরের জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন চায়। বিএনপির এই দাবির পক্ষে আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল রয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী চায় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন। অন্যদিকে, জুলাই আন্দোলন ঘিরে গড়ে ওঠা নতুন দল এনসিপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবি—আগে সংস্কার ও স্থানীয় সরকার এবং সবশেষে জাতীয় নির্বাচন। আবার গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিও তুলছে এনসিপি। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখা নিয়েও একটি পক্ষ প্রচার চালাচ্ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাংগীর আলমও এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণ আরও পাঁচ বছর দেখতে চায়।’ এমন আলোচনা এবং সংস্কার-নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান কিছুটা জটিলতা তৈরি করছে। এ অবস্থায় দলগুলোর কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন না হলে আবারও আন্দোলনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তিন মাস মাঠে থাকার কথাও জানিয়েছে বিএনপি।
পোস্টার-প্রচারণা নেই বিএনপির: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর রাজনীতিতে বহুমুখী ঘটনার উদ্ভব হয়। তারই একপর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় বিএনপি। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে শোভাযাত্রা ও ব্যানার-ফেস্টুনে নিষেধাজ্ঞা দেয় দলটি। যা বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও তৃণমূল পর্যায়ে পাঠানো হয়। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য নির্দেশক্রমে জানানো যাচ্ছে যে, আপনাদের অধীন কোনো ইউনিটে সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশ্যে সফরকালে কোনো ধরনের মোটরসাইকেল বহর ও কারসহ অন্য কোনো যানবাহনে শোভাযাত্রা পরিহার করতে হবে। কেননা, এসব কারণে সাধারণ মানুষের যানবাহন বা পথচারীদের যাতায়াতে ভয়ানক বিঘ্ন ঘটে, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যেহেতু বিএনপি গণসম্পৃক্ত একটি রাজনৈতিক দল, সেহেতু জনগণকে দুর্ভোগের মধ্যে না ফেলে মোটরসাইকেল বহর বা অন্য কোনো যানবাহনের শোভাযাত্রা পরিহার করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। এরই মধ্যে লক্ষ করা যাচ্ছে, ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের রং-বেরঙের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন প্রদর্শন করতে। এটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু, অনভিপ্রেত এবং দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি। দলের অতিউৎসাহী কিছু নেতা নিজেদের ছবি সংবলিত পোস্টার প্রকাশ করছেন এবং ফেস্টুন ও ব্যানার ঝুলিয়ে রাখছেন। এহেন পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন প্রদর্শন করা থেকে নেতাকর্মীদের বিরত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে।’
জানা যায়, দলের হাইকমান্ডের এমন কঠোর পদক্ষেপের পর থেকেই মূলত ব্যানার, পোস্টার লাগানো এবং শোভাযাত্রা থেকে বিরত থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে পোস্টার-ব্যানার নামিয়ে ফেলা হয়। যদিও কিছু কিছু এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের হাতে গোনা কিছু পোস্টার-ব্যানার দেখে গেছে। এ বিষয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, অনেকেই অন্যের দালানে-দোকানে ব্যানার-পোস্টার লাগায়। এটা ঠিক নয় এবং অন্যের নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। আমরা তো ১৭ বছর ধরে নাগরিক স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি। আমরা তো কারও অধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারি না। নির্দিষ্ট সময়ের পরও যাদের
ব্যানার-পোস্টার দেখা যাবে, দল তার বিরুদ্ধে জরিমানা এবং মামলা করবে। এমনকি সাংগঠনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। পোস্টার-ব্যানার দিয়ে শহর অপরিষ্কার করতে পারি না। কারও পক্ষে পোস্টার লাগানো, এটি রুচি হতে পারে না।
বিএনপির চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির বিশেষ সহকারী বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু কালবেলাকে বলেন, বিএনপি হচ্ছে জনগণের দল। আজকে সংস্কার নিয়ে যারা বড় বড় কথা বলেন তারা এতদিন কোথায় ছিলেন? সরকারের উচিত অবিলম্বে একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। তা না হলে দেশে অস্থিরতা দেখা দেবে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা বলছি, সরকার যখন নির্বাচনের ঘোষণা দেবে, তখন আমরা নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করব। আমরা তো এখনো নিশ্চিত নই যে, ওরা নির্বাচন দেবে কি না। বাকিরা হয়তো নিশ্চয়তা পেয়ে কাজকর্ম শুরু করেছে।’
পোস্টার-প্রচারণায় জামায়াত: জামায়াতে ইসলামী আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও স্থানীয়, এরপর সংসদ নির্বাচনের কথা বলে আসছে শুরু থেকেই। তবে তৃণমূলে উল্টো চিত্র। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ব্যাপকভাবে প্রচার চালাচ্ছে জামায়াত। সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী ঘোষণাসহ তৃণমূল চষে বেড়াচ্ছেন দলটির শীর্ষ নেতা এবং সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলাওয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ করছেন এবং তাদের আপদ-বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করেন। এখন ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করছেন। এলাকার মানুষ তাকে এমপি হিসেবে দেখতে চায় বলে তিনি জানান।
জামায়াতের সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, আগামী নির্বাচনে ইতিহাস সৃষ্টি করতে চায় জামায়াত। সেজন্য বিএনপি দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে মাঠে সরব থাকলেও প্রচারণায় এগিয়ে তারা। দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এখন থেকেই মানবিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনমত তৈরির সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে তাদের দুই শতাধিক আসনে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেছে। বাকি আসনের প্রার্থী তালিকা বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় নানা দলীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ কালবেলাকে বলেন, আমিরে জামায়াত এরই মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে পরিষ্কার করেছেন। তিনি গত বুধবারও বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে কমিটমেন্ট দিয়েছে জামায়াত সেটি দেখতে চায়। এ ছাড়া তিনি (জামায়াত আমির) বলেছেন, আগামী প্রথম রমজানের আগেই জামায়াত নির্বাচন চায়। কেননা, জুনে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থাকে। এতে নির্বাচন অনিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অর্থাৎ ন্যূনতম যে সংস্কার দরকার, আমরা চাই এ সংস্কারগুলো দ্রুত হোক। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে দেওয়া উচিত।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছি। এগুলো ছাড়া সব নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণও করেছি। নির্বাচনী দল হিসেবে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। রয়েছে সার্বিক প্রস্তুতি।
নির্বাচনী আসনে সক্রিয় এনসিপি: গত পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে এলাকায় পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন সাঁটানো, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে গিয়ে জনসংযোগ, ঈদ পুনর্মিলনী ও মতবিনিময়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের গড়া এই দলের নেতারা। ঈদুল ফিতরে অন্তত অর্ধশত নির্বাচনী আসনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ও জনসংযোগে জোর দিয়েছেন তারা। গত ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতরের আগেই এনসিপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় চলে যান। তার আগে রমজানের শেষ দিকে অনেকে নিজ নিজ এলাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। শহীদ পরিবারগুলোকে ঈদ উপহারও দিয়েছেন অনেক নেতা। ঈদের দিন এবং আগে-পরে এনসিপির স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় ও জনসংযোগ করেছেন। কেউ কেউ নিজ এলাকায় ঈদের জামাতে বক্তব্যও দিয়েছেন। কোথাও কোথাও প্রীতি ফুটবল, ক্রিকেট খেলাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এসব আয়োজনের পাশাপাশি স্থানীয় সংখ্যালঘু ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করতে দেখা গেছে। ঈদ উদযাপন শেষে এনসিপির প্রায় সব নেতা ঢাকায় ফিরেছেন। কেউ কেউ এলাকায় দলীয় এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন কালবেলাকে বলেন, এনসিপি এখন তার কর্মপরিধি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে গণসংযোগের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আমরা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি; মানুষের সঙ্গে কথা বলছি; এনসিপির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলছি; আমরা মানুষকে এনসিপির বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করছি।
তিনি বলেন, নির্বাচনে আগে আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। কেননা, একটা নির্বাচনের মাধ্যমেই গণপরিষদ এবং জাতীয় সংসদের প্রতিনিধি হওয়া সম্ভব। তারা একসঙ্গে দ্বিবিধ দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন হওয়ার আগেই সংস্কার, বিচারের দৃশ্যমানতার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। আমরা মনে করি সরকার সংস্কার এবং বিচারের রোডম্যাপ প্রকাশের মধ্য দিয়ে তারা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন বলেন, সরকারের তরফে সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং ওই কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়েছে। তারা মতবিনিময় করছেন। আমরা আশাবাদী কথাবার্তা বলতে বলতেই ঐকমত্যের দিকে পৌঁছে যাবে।
Leave a Reply