নিউইয়র্কের সোদাবির নিলামে উঠেছে তিনশ বছরেরও বেশি পুরানো একটি বেহালা। আশা করা হচ্ছে, এবার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সবচেয়ে দামি বাদ্যযন্ত্রের রেকর্ড ভাঙতে পারে বেহালাটি।
ব্যতিক্রমী নির্মাণশৈলী এটিকে অনন্য বস্তুতে পরিণত করেছে। এছাড়া বিখ্যাত শিল্পীদের হাত ঘুরে আসায় অমূল্য সম্পদেও পরিণত হয়েছে বেহালাটি।
বিখ্যাত বেহালা নির্মাতা আন্তোনিও স্ট্রাডিভারির তৈরি জোয়াকিম-মা স্ট্রাডিভারিয়াস নামের এই বেহালাটি তাই হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে মূল্যবান সংগীতযন্ত্র।
সোদাবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বেহালাটির সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
আশা করা হচ্ছে, এ মূল্য ছাড়িয়ে যাবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী এখন পর্যন্ত নিলামে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি বাদ্যযন্ত্র লেডি ব্লান্ট এর দাম।
জানা যায়, ২০১১ সালে ১ কোটি ৫৯ লাখ ডলারে বিক্রি হওয়া বেহালাটিও ইতালীয় কারিগর স্ট্রাডিভারিরই তৈরি।
সোদাবির প্রধান মেরি ক্লদিয়া হিমেনেজ জানান, ১৭১৪ সালে তৈরি হলেও এটি এখনও সময়ের সেরা বেহালা। এর নির্মাণ ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
বেহালা নির্মাতা স্ট্রাডিভারি সোনালি যুগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ওই সময়েই তিনি তার শিল্পকে পরিপূর্ণতার পর্যায়ে নিয়ে যান। তিনি বেহালার আকৃতি পরিবর্তন করেন, কাঠামোগত পরিবর্তন করেন এবং সর্বোচ্চ মানের শব্দ তৈরির কৌশল পুরোপুরি আয়ত্ত্ব করেন। আর এজন্যই স্ট্রাডিভারিয়াস বেহালাগুলো সবচেয়ে বেশি মূল্যবান ও আকাঙ্ক্ষিত।
বেহালাটির মালিকানার ইতিহাসও ব্যতিক্রমী। বেহালার সঙ্গে বিখ্যাত দুই মালিক যোসেফ হোয়াকিম এবং সি-হন মার নাম জড়িয়ে রয়েছে। সোদাবি জানায়, হাঙ্গেরীয় শিল্পী হোয়াকিম ১৮৭৯ সালে বিখ্যাত “ভায়োলিন কনসার্তো ইন ডি মেজর” এর প্রথম পরিবেশনায় ব্যবহার করেছিলেন এই বেহালা।
এরপর ১৯৬৯ সালে এই বেহালাটি সংগ্রহ করেন চীনা শিল্পী সি-হন মা। তার মৃত্যুর পর বেহালাটি বোস্টনের নিউ ইংল্যান্ড কনজারভেটরি-তে দান করে দেয় তার পরিবার। এখন কনজারভেটরি এটি নিলামে তুলছে এবং এর পুরো আয় শিক্ষার্থীদের বৃত্তির জন্য তহবিলে প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
Leave a Reply