তিন দশক আগে ১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার অভিযোগে করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়াও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ২৫ আসামিকেও খালাস দেওয়া হয়েছে।
এ সময় হাইকোর্ট বলেন, মামলাটি বিদ্বেষ্পূর্ণ, রায়ে পক্ষপাতিত্ব করেছে বিচারিক আদালত।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আদালতকে বলেন, শেখ হাসিনাকে খুশি করতেই ২০১৯ সালের ৩ জুলাই ৯ জনকে ফাঁসি ও ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও অর্থদণ্ড দেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন শেখ হাসিনা। ওই বছর ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ট্রেন মার্চ করেন তিনি। ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে পৌঁছালে শেখ হাসিনার অবস্থা লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছোড়া হয় বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিনই একটি মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল ৫২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। এদের মধ্যে পাঁচজন মারা গেলে তাদের চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
পরে আলোচিত এ মামলায় ২০১৯ সালের ৩ জুলাই জাকারিয়া পিন্টুসহ ৯ জনকে ফাঁসি, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও অর্থদণ্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছর মেয়াদ কারাদণ্ড দেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আসামিদের সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। এরইমধ্যে এ মামলার পাঁচ আসামি মারা গেছেন।
পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি খালাস চেয়ে আপিল করেন আসামিরা।
Leave a Reply