জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তির মানহানির মামলায় সাময়িক বরখাস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (সহকারী কমিশনার) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ এ আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জগঠনের এই আদেশ দেন। এই চার্জগঠনের মাধ্যমে এ মামলায় তার বিচার শুরু হলো।
এদিকে চার্জগঠনের আদেশের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।এদিন তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি জামিনে থেকে আদালতে হাজির হন।
অব্যাহতির শুনানিতে তার পক্ষের আইনজীবী পিএম মাহাদী হাসান বলেন, ‘আসামি মামলার কথিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তার বিরুদ্ধে মামলার কথিত ঘটনা মিথ্যা। আসামি সম্পূর্ণ নির্দোষ। সেই সময়ে পারিপার্শ্বিক ঘটনা সম্পর্কে ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী নিজস্ব অভিমত প্রকাশ করেছেন। সেই পোস্ট বাদীর সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কিত নয়। দণ্ডবিধির ৪৯৯/৫০০ ধারার বিধানে মানহানির ক্ষেত্রে যেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, সেই ব্যক্তি নিজে এবং মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তার বাবা, মা অথবা নিকটাত্মীয়রা এই মানহানির মামলা করতে পারেন। ’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মামলার বাদী শহীদ আবু সাইদের বা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রক্ত সম্পর্কিত কেউ নন। বাদীর দায়েরকৃত অভিযোগ করার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই বিধায় আসামি অব্যাহতি পাবার হকদার বটে।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানিতে বলেন, ‘আসামি ইচ্ছাকৃতভাবে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই ফেসবুকে এই মানহানিকর পোস্ট দিয়েছেন। এ মামলার বাদী সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নেন ও ১১ দিন জেলহাজতে ছিলেন। তাই এই মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে আইনগত বাধা ছিল না। এ মামলায় অভিযোগ গঠনের যথেষ্ট উপাদান রয়েছে৷’
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদসহ অন্য শহীদদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলার আবেদন করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড এবং পর্যালোচনা শেষে গত ২৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। ওইদিন আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম ফেসবুকে একটা পোস্ট দেন। সেখানে তিনি আবু সাঈদ, অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন।
Leave a Reply