1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩৩ অপরাহ্ন

এক ওভারে তিন ওয়াইড ঘিরে সন্দেহজনক লেনদেন, বিপিএলে হচ্ছেটা কী?

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৫

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৭ জানুয়ারি তারিখে হয়ে যাওয়া ঢাকা ক্যাপিটালস বনাম রংপুর রাইডার্সের ম্যাচে ঢাকার বোলার আলাউদ্দিন বাবুর করা টানা ৩টি ওয়াইড বলকে ঘিরে বাজির ওয়েবসাইটগুলোতে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে, এমনটাই একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছেন বিখ্যাত অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক জ্যারড কিম্বার। ১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে কিম্বার লিখেছেন, ঢাকা-রংপুর ম্যাচে ১০ ওভার শেষে রংপুরের রান ৭৯.৫ এর বেশি হবে এর পক্ষে বেটফেয়ার-সহ বিভিন্ন বাজির ওয়েবসাইটে বাজির দর ছিল ১ ঃ ১০০০, ১ঃ ২০০০ এ রকম যা খুবই অস্বাভাবিক। আলাউদ্দিন বাবু যখন ১০ ওভার করার জন্য বল হাতে নেন তখন রংপুরের রান ছিল ২ উইকেটে ৬২। ৯ বলের ওভারে আলাউদ্দিন বাবু দিয়েছেন ১৩ রান, যার একটি পিচের এত বাইরে পড়েছে যে ওয়াইড হয়ে বল বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ৪ হয়েছে। শেষ একটি বৈধ ডেলিভারি করতে আলাউদ্দিন বাবু খরচ করেছেন ৯ রান। কিম্বারের কাছে ইংল্যান্ডের বাজির ওয়েবসাইটের কর্তাব্যক্তিরা বলেছেন যে এই সময় অস্বাভাবিক হারে লেনদেন হয়েছে বিভিন্ন বাজির ওয়েবসাইটে।

বাংলাদেশের আইনে বাজি ধরা অবৈধ হলেও অনেক দেশেই তা বৈধ। বেটফেয়ার-এর মতো প্রতিষ্ঠান ২০০০ সাল থেকে ব্যবসা করে আসছে যুক্তরাজ্যে, অস্ট্রেলিয়া-সহ অনেক দেশে। এই সব বাজির ওয়েবসাইটে নানান খেলার ফলের ওপর মানুষ বাজি ধরে, জয়ী হলে পুরস্কার পায়। বিপিএলের ম্যাচকে ঘিরে বহির্বিশ্বে আগ্রহ কম হলেও ৭ জানুয়ারির ম্যাচকে ঘিরে বেশ কিছু অস্বাভাবিক অঙ্কের লেনদের কথা জ্যারডকে জানিয়েছেন  ‘ডেসিম্যাল ডাটা সার্ভিস’ নামে খেলার জগতের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের হেড অব ক্রিকেট রব ব্যারন, ‘বিপিএলকে ঘিরে আমরা সবসময়ই একটু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করি কারণ বিশ্বের প্রধান টি-২০ লিগগুলোর মধ্যে এই লিগের বাজারটাই সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত আচরণ করে। কখনো মনে হয় এই খেলার প্রতি বাজি ধরার লোকদের কোনো আগ্রহই নেই। যেমন প্রথম ওভারেই কোনো দল বিনা উইকেটে ১৫ করে ফেলল, এরপরই দেখা যায় বোলাররা খুব ভালো করেছে আর বোলিং দলের জেতার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে। বাজার আমাদের সেটাই বলে বোলাররা ভালো শুরু পেয়েছে’ বলেছেন বাজির ওয়েবসাইটকে হারজিতের দর ঠিক করে দেওয়া এই পরিসংখ্যানবিদ। তার ব্যাখ্যা হচ্ছে, ‘যখন কোনো বাজির দর অস্বাভাবিক বেশি মনে হয়, তখন বাজি ধরা মানুষরা মনে করেন দুপক্ষের কোন সেই দলটাই জিতবে যাদের জেতার কথা। এভাবে বাজার আরও সঙ্কুচিত হয়। হয়তো এর পেছনে কিছু নেই তবে ক্রিকেটে আজকাল এমন অনেক কিছুই ঘটছে।’

অনেক পেশাদার বাজিকর এবং প্রতিষ্ঠানই বিপিএলের ম্যাচে বাজি ধরেন না। তাদের কাছে বিপিএল ত্রুটিপূর্ণ। এখানকার বাজার খুবই ভঙ্গুর এবং একপেশে। এখানে স্বাভাবিক ক্রিকেটের ধারাটা প্রতিফলিত হয় না। এই খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকেই জানিয়েছেন যে বিপিএলকে ঘিরে যে অস্বাভাবিকতা দেখা যায় বাজির দুনিয়ায়, সেটা আর দেখা যায় শুধু টি-১০ লিগগুলোতে। বিপিএলের এই অস্বাভাবিক চরিত্রের কারণেই পেশাদাররা বিপিএলমুখী হন না, এমনটাই লিখেছেন জ্যারড।

এই সাংবাদিক সরাসরি কারও দিকে আঙুল না তুলে দেখিয়েছেন কয়েকটি দৃষ্টান্ত যা অস্বাভাবিক কর্মকা-ের ইঙ্গিত। ঢাকা-রংপুর ম্যাচে বেটফেয়ার-সহ বিভিন্ন বাজির ওয়েবসাইটে  ১০ ওভার শেষে রংপুরের রান ৭৮.৫ এর বেশি হবে, এই শর্তের পক্ষে অস্বাভাবিক হারে বাজি ধরা হয়েছিল। সাইফ হাসান যখন আলাউদ্দিন বাবুর বলে আউট হলেন, ওভারের পঞ্চম বলে তখন রংপুরের দলীয় রান ৭২। শর্ত পূরণের জন্য ১ বলে দরকার ৭ রান, যেটা ক্রিকেটে সম্ভব তবে তা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম। আলাউদ্দিন বাবু সেই সম্ভাবনা মিলিয়েছেন টানা ৩টা ওয়াইড বল করে। উইকেটপ্রাপ্তির পরের বলটা তিনি করেছেন লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে যেটা বাউন্ডারি পেরিয়ে চার হয়েছে। এরপর অফসাইডে বিশাল দুটো ওয়াইড বল করেছেন, ফলে কোনো বৈধ বল না হলেও রংপুরের খাতায় ৭ রান বেড়েছে। অর্জিত হয়েছে ৭৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা, যে শর্তপূরণ হলেই জেতা যাবে বাজিতে। ৮ম ওভার শেষে রংপুরের রান ছিল ৫৪, পরের ১২ বলে ১৭ রান দিয়েছে ঢাকা যার ভেতর ১২ রানই ছিল ওয়াইড থেকে, দুটো ওয়াইড বাই চার  হয়েছে যা প্রশ্নবিদ্ধ। দলের সেরা অন্যতম  ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়ার পরেও ১০ ওভারে রান ৭৮.৫ এর বেশি হবে, প্রথম ১০ ওভারের ভেতর ওয়াইড থেকেই ১৩ রান আসবে এ রকম ঘটনা ক্রিকেট মাঠে খুব স্বাভাবিক নয়, হয়তো ২০০-৩০০ ম্যাচে একবার হবে। এ রকম ঘটনার পক্ষে ১-১০০০, ১-২০০০ এই দরে বাজি ধরা হচ্ছে এবং অনেকেই বাজি ধরছেন এই ব্যাপারটাই অস্বাভাবিক বলছেন জ্যারড।

১০ জানুয়ারি সিলেট-ঢাকা ম্যাচেও সিলেটের রান ৬ ওভার শেষে ৬৬-এর বেশি হবে, এই শর্তে অস্বাভাবিক অঙ্কের বাজি ধরা হয়। এই ম্যাচেও সিলেটের রান যখন ৪ ওভার শেষে ৪২/২, তখন পঞ্চম ওভারে ফরমানউল্লাহ এসে প্রথম বলে উইকেট পাওয়ার পর টানা দুটো ওয়াইড দিয়েছেন। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে অধিনায়ক থিসারা পেরেরা বল দিয়েছেন শুভম রাঞ্জানেকে, ৪ খানা চারের মার হজম করার পাশাপাশি একটা করে ওয়াইড ও নো-বল করেছেন এই স্পিনার। এভাবেই ৬৬ রানের সমীকরণ মিলে গেছে যা খানিকটা অস্বাভাবিকই।

এ নিয়ে বিপিএলের দুর্নীতি দমন বিভাগের কোনো পর্যবেক্ষণ আছে কি না জানতে চাইলে দেশ রূপান্তরকে গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদন ফাহিম বলেন, ‘বিসিবির নিজস্ব দুর্নীতি দমন বিভাগ বিপিএলে কাজ করছে। ক্রিকেটে অনৈতিক আচরণ বা দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে  বিসিবি শক্ত পদক্ষেপ নেবে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ভেতরে ভেতরে সব রকম কর্মকা-ের ওপরই বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ কাজ করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com