1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন

শব্দচয়নে নবীজির নির্দেশনা

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫

সদা সত্য ও সুন্দর কথা বলা একজন মুমিনের অতি উত্তম গুণাবলির অন্যতম। কথায় ব্যবহৃত শব্দাবলির চয়ন ও বাক্যের গাঁথুনিতেও আছে ইসলামের নির্দেশনা। বিশেষভাবে একজন বক্তা বা দাঈর খুব চৌকান্ন ও সতর্কতা কাম্য। আর তা যদি হয় গণমানুষের জমায়েতে তাহলে তো কথাই নেই। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান করো হেকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে তর্ক করবে উত্তম পন্থায়।’ (সুরা নাহল ১২৫)

ইসলাম একটি সর্বজনীন আলোকিত জীবনব্যবস্থা। সব অঙ্গনেই ইসলামের দিকনির্দেশনা রয়েছে। বক্তৃতা ও কথা বলার ক্ষেত্রেও রয়েছে উত্তম আদর্শ। নবীজি (সা.) বিশুদ্ধ ভাষায় কথা বলতেন এবং অন্যকেও শুদ্ধভাবে বলতে উৎসাহিত করতেন। কেউ ভুল শব্দ প্রয়োগ বা অসংগতিপূর্ণ শব্দ উচ্চারণ করলে সঙ্গে সঙ্গে তা সংশোধন করে দিতেন। অপমানজনক অর্থের সম্ভাবনাময় শব্দ, ভদ্রতাপরিপন্থি শব্দ, আত্মসম্মানবোধের বিপরীত শব্দের ব্যবহার পরিহার করতে বলতেন। ইহুদিরা রাসুল (সা.)-এর শানে বেয়াদবিমূলক ও উপহাসসূচক ‘রায়িনা’ শব্দ ব্যবহার করত। ‘রায়িনা’ আরবি ভাষায় ব্যবহৃত নির্দেশসূচক শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে ‘আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন’। সাহাবায়ে কেরাম এ শব্দটি রাসুল (সা.)-এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেন। কিন্তু এ শব্দটি ইহুদিদের ভাষায় এক প্রকার গালি ছিল, যা দ্বারা বোঝানো হতো ‘বিবেক বিকৃত’ লোক। এর আরেক অর্থ ‘আমাদের রাখাল’। তারা এ শব্দটি রাসুল (সা.)-এর শানে উপহাসসূচক ব্যবহার করত। মুমিনরা ব্যাপারটি উপলব্ধি না করে তারাও শব্দটির ব্যবহার করে যায়। এর ফলে আল্লাহতায়ালা এ ধরনের শব্দ বলতে নিষেধ করে আয়াত নাজিল করে ‘উনজুরনা’ শব্দ ব্যবহার করতে বলেন। এর অর্থ ‘আমাদের প্রতি নেকদৃষ্টি দেবেন’। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা ‘রায়িনা’ বলো না; বরং ‘উনজুরনা’ বলো। আর শোনো, কাফেরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা বাকারা ১০৪)

নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি অনুরাগ ও ভালোবাসা তৈরি যেন না হয় সে জন্যও রাসুল (সা.) সতর্ক করেছেন। জাহেলি যুগে মাদকের উৎস আঙুরকে ‘কারম’ বলা হতো। যা মদের কাঁচামাল। ইসলাম পরবর্তী সময়ে সেই মদের প্রতি যেন কোনো ধরনের আকৃষ্টতা বা প্রীতি তৈরি না হয়, সে জন্য তিনি আঙুরকে ‘ইনাব’ বলতে বলেছেন, ‘কারম’ বলতে বারণ করেছেন।

আমরা সবাই আল্লাহর দাস বা বান্দা। একমাত্র আল্লাহরই দাসত্ব ও ইবাদত করি। তার কাছেই সাহায্য চাই। তিনিই একমাত্র আমাদের রব বা পালনকর্তা। তাই দুনিয়ার কোনো মানুষ অপর মানুষের দাস হতে পারে না, রব হতে পারে না। হ্যাঁ, সেবক বা মনিব হতে পারে।

এক সাহাবি ঘরে প্রবেশের জন্য নবীজি (সা.)-এর অনুমতি নিতে গিয়ে বলেন, ‘আআলিজু’? এ শব্দটি কোনো সংকীর্ণ স্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। নবীজি খাদেম পাঠিয়ে তাকে ঘরে প্রবেশের আদব শিক্ষা দিলেন। খাদেমকে বললেন, যাও তাকে গিয়ে বলো, সালম দিয়ে ‘আআদখুলু’ বলতে। এর অর্থ আমি কি ভেতরে প্রবেশ করব? (আবু দাউদ ৫১৭৭)

সমাজ সচেতনতা তৈরির জন্য বয়ান অন্যতম একটি মাধ্যম। হজরত আদম (আ.) থেকে নিয়ে শেষনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত সব নবী-রাসুলই চমৎকার মুগ্ধকর বয়ানের মাধ্যমে উম্মতকে পথ দেখিয়েছেন। তাই বক্তাদেরও উচিত নবীজির জীবন থেকেই আদর্শ গ্রহণ করে সমাজকে আলোকিত করা। রাসুল (সা.) মাধুর্যপূর্ণ শব্দচয়ন করে দরদি ভাষায় বয়ান করতেন। মিষ্টি ভাষায় কথা বলতেন। যুক্তির আলোকে বোঝাতেন। গুরুত্বপূর্ণ কথার পুনরাবৃত্তি করতেন। শ্রোতারা কখনই বিরক্তিবোধ করতেন না। তার শৈল্পিক ও অনন্য উপস্থাপনা এতই চমৎকার ছিল এবং শ্রোতারা এতই মনোযোগ দিয়ে কথা শুনতেন যে, বৃক্ষ মনে করে শ্রোতাদের মাথার ওপর পাখি এসে বসত। কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি উপদেশ তথা বয়ান করতে থাকুন। আপনি তো শুধু উপদেশদাতা। আপনি তাদের কর্মনিয়ন্ত্রক নন।’ (সুরা গাশিয়া ২১-২২)

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com