কোটা সংস্কার আন্দোলনে আটক সব শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয়ের গেটে এ মানববন্ধন শুরু হয়।
মানববন্ধনে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইমুম রেজা তালুকদার বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, আমরা কি কোনো জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি? যদি না থাকি তাহলে আমাদের সাংবিধানিক অধিকার দিতে হবে। সভা-সমাবেশের অধিকার, বাক্-স্বাধীনতার অধিকার- এগুলো কেন নিশ্চিত করা হচ্ছে না এবং রাস্তায় কেন সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে? কি এমন ঘটেছে যে জরুরি অবস্থার মতো পরিবেশ বাংলাদেশে জারি আছে। এই প্রশ্নের উত্তর সরকারকে দিতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে হেফাজতে নেওয়ার সমালোচনা করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আপনাদের কে বলল যে আপনাদের কাছে তারা নিরাপদবোধ করবে? নিরাপত্তার সংজ্ঞা দিয়ে দিয়েন, আমরা সংবিধানে দেখব হেফাজতের আইনে কি কি আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আসার আগে তাদের (সমন্বয়কদের) ছেড়ে দিয়েছেন বলে শুনেছি। তারা তাদের পরিবারের কাছে গেছে কি না, তা এখনো জানি না। ছেড়ে দেওয়া মানে কিন্তু শুধু পরিবারের কাছে আবদ্ধ নয় কিন্তু। তারা যে কাজটি করেছে, তাতে কোনো অন্যায় নেই। তারা যেন মুক্তভাবে তাদের কাজটি করতে পারে আমরা সে নিশ্চয়তা চাই।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে, প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিটি বিষয়ে, প্রতিটি পর্যায়ে জনগণকে মূর্খ মনে করেছে, অথচ নিজেরা যে মূর্খতার পরিচয় দিচ্ছে সেটি তারা ভুলে গেছে। এই মিথ্যাচার, অন্ধত্ব ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তারা যে কাজগুলো করেছে, সেটা সম্পূর্ণ সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, আইনের লঙ্ঘন করেছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘সরকার মিথ্যাচার ও বলপ্রয়োগের মাধ্যমে টিকে আছে। যতক্ষণ আমাদের সব আটক ছাত্রদের মুক্তি না দেওয়া হয়, যদি হত্যার বিচার না করা হয়, যদি শিক্ষাঙ্গণ খুলে না দেওয়া হয় অবিলম্বে, তাহলে আমাদের নাগরিক সমাজের আরও বৃহত্তর কর্মসূচি থাকবে।’
এ সময় আগামীকাল শুক্রবার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের ঘোষণা দেন তারা। সমাবেশে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
Leave a Reply