‘আজিজ-বেনজীরের মতোই আরো দুর্নীতিবাজ সরকারের আশ্রয়েই আছে’ বলে দাবি করেছেন জয়নুল আবদিন ফারুক। শুক্রবার সকালে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এই দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘আজকে কোথায় বেনজীর (সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ), কোথায় আজিজ (সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহমেদ), কোথায় মতিউর (রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান)? আবার নতুন করে ফয়সলেরা আবিস্কার হয়েছে।’
‘বাংলাদেশে এভাবে বহুলোক সরকারের আশ্রয়ে আছে, যারা কোটি কোটি-হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশের মাটিতে বাড়ি করে সুইমিং পুল তৈরি করে রাত্রে সাঁতার কাটে। এসব লোকদেরকেও আপনাকে বের করতে হবে। নইলে বাংলাদেশের মানুষ আপনাকে কোনো দিনও ক্ষমা করবে না।’
বিরোধী দলের সাবেক প্রধান হুইপ বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) যেভাবেই কথা বলছেন, কথা বলেন। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সচেতন। ক্ষমতায় টিকে আছেন আমলাতন্ত্র দিয়ে। কিছু সংখ্যক আমলা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে আপনাদের পক্ষে এক দিনের জন্য এখনো নিতে পারেন নাই। তাই ভাইয়ে ভাইয়ে নির্বাচন, ডামি নির্বাচন। এমপি হবেন, এমপির ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান হবে, এমপির বউ পৌরসভার চেয়ারম্যান হবেন, এমপির ভাগিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হবে, এটা বাংলাদেশের জনগণ কখনো চায় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘যে গণতন্ত্রের আপনারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন ৫ মিনিটে সংসদে দাঁড়িয়ে, যে ভোটের বাক্স হেলিকপ্টারে করে এনে এমপি নির্বাচিত করেছেন, সেই আওয়ামী লীগ আবারো ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির কথিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের মসনদের বসেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে, তারেক রহমানকে দেশের বাইরে রেখে, চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলীকে গুম করে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসদের জেলে রেখে আপনারা মনে করেছেন, এ দেশে বিএনপির রাজপথের আন্দোলনকে ঠেকাবেন। আমরা বলে দিতে চাই, এটা জনগণ ও বিএনপি কখনো মেনে নেবে না।’
ফারুক বলেন, ‘বক্তব্য স্পষ্ট, আমার বুকের ওপর দিয়ে আপনি রেললাইন নির্মাণ করবেন, আমার স্বাধীন ভূমির ওপর দিয়ে আপনি রেললাইন নির্মাণ করে আপনি ৩০ ঘণ্টার পথ সাত ঘণ্টা করবেন। আমাদের আপত্তি একটাই যে আমার সার্বভৌম দেশ যে দেশের জন্য হাফ পেন্ট করে খালি পায়ে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। নির্মম সত্য হলেও বলতে হয় সেই কথা আপনাদের মনে নাই। আপনাদের তখন কি মনের ভেতরে ছিল যে জনগণ তা বলা শুরু করেছে, ‘দেশ স্বাধীন করে দেবো কিন্তু বাংলাদেশের মাটি আমি ব্যবহার করবো’।’
তিনি আরো বলেন, আমি বলে দিতে চাই, ভারতের সাথে এসব অসম চুক্তি বলেন, সমঝোতা বলেন, এসব জনগণ মানে না, আমরা মানি না, মানতে পারি না। এসব অসম চুক্তি বাতিল করুন। বিএনপিকে বলব, এমন কর্মসূচি দেন যেই কর্মসূচির মাধ্যমে ভারতীয় আগ্রাসনের ব্যাপারে জনগণ সোচ্চার হতে পারে।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রজন্ম বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ভারতের সাথে ‘অবৈধ সরকারের অবৈধ চুক্তি-সমঝোতা’র প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
প্রজন্ম বাংলাদেশের সভানেত্রী বিএনপির প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়ন বিষয়ক সহ সম্পাদক অপর্ণা রায় দাসের সভানেত্রীত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপির আবদুল সালাম আজাদ, আবদুল ওয়াদুদ ভুঁইয়া, কাদের গণি চৌধুরী, যুব জাগপার আমির হোসেন আমু প্রমুখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
Leave a Reply