গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে নানা চড়াই-উতরাইয়ের দেখা মিলেছে। ইসরায়েলকে অস্ত্র দিতে না চাওয়া এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের অবস্থান তেল আবিবের কাছে খোলাসা করতে ওয়াশিংটনের অস্বীকৃতি দুই দেশের মধ্যে মনোমালিন্য প্রকাশ্যে আসে। তবে এবার কুখ্যাত ইসরায়েলি গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদের প্রধানের সঙ্গে দেখা করার উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান। ইউরোপের একটি দেশে হবে এই বৈঠক। হঠাৎ ওই বৈঠক কেন, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সামনের দিনগুলোতে ইউরোপে যাবেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস। তখন তিনি সেখানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনেয়ার ও কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল থানির সঙ্গে বৈঠক করবেন। হামাসের কাছে জিম্মি ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনার রাস্তা খুলতেই নাকি এই নেতারা বৈঠক করবেন।
দুই সপ্তাহ আগে হামাস ও ইসরায়েলি সরকারের মধ্যে একটি মধ্যস্থতার আলোচনা ভেস্তে যায়। যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার ওই আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছিল। কিন্তু হামাসের শর্তের সঙ্গে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমতের কারণে আলোচনা ভেস্তে যায়। এখন ইউরোপে আলোচনা প্রক্রিয়ার কথা শোনা যাচ্ছে, তাতে মিশরের গোয়েন্দাপ্রধান আব্বাস কামেলও থাকতে পারেন। মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
কিছু দিন আগে টাইমস অব ইসরায়েল ও সিএনএনে খবর বেরোয় যে শেষ দফার আলোচনায় ইসরায়েল ও হামাসকে ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে মিসর। এরপরই ওই মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া থমকে যায়। এমন খবর সামনে আসতেই চটেছে মিসর। তারা বলছে, মধ্যস্থতার প্রক্রিয়ায় তাদের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ করলে তারা এর মধ্যে নিজেদের জড়াবে না। গেল মাসে কাতারও একই ধরনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, কায়রো চাইলেও এই আলোচনা প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারবে না। কারণ গাজার সঙ্গে মিশরের সীমানা রয়েছে, তাই এই সংঘাতের সঙ্গে তারাও বাধা আছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে কাতার যতদিন হামাসের নেতাদের দেশটিতে থাকতে দেবে, তারা এই প্রক্রিয়ার বাইরে যেতে পারবে না। কাতারের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের আস্থা আছে বলেও উল্লেখ করেছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
গেল বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতর হামলা চালিয়ে কয়েকশ’ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে হামাস। পরে তাদের মধ্যে কয়েক ডজন ইসরায়েলিকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে হামাসের হাতে এখনও শতাধিক ইসরায়েলি জিম্মি আছে। ওই জিম্মিদের মুক্তি এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এই দুই ইস্যুতে ইসরায়েল ও হামাস একমত হতে পারছে না। তাই বারবার মধ্যস্থতার প্রক্রিয়া ভেস্তে যাচ্ছে। এবার তিন দেশের গোয়েন্দাদের বৈঠকে পরিস্থিতির বদল হয় কিনা, সেটাই দেখার বিষয়।
Leave a Reply