পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ইসরাইলি প্রতিররক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নেটজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করার ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তিনটি মার্কিন সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
এই প্রথমবারের মতো পশ্চিম তীরে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য মার্কিন সরকার কোনো ইসরাইলি সামরিক ইউনিটের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করতে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, মার্কিন অবরোধের মধ্যে থাকবে আমেরিকার কোনো সহায়তা নেটজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নকে দেয়া যাবে না, এই ইউনিটের অফিসার ও সৈন্যদের মার্কিন সামরিক বাহিনীর কোনো প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে রাখা যাবে না, আমেরিকার তহবিল পায়- এমন কোনো কার্যক্রমে এই ইউনিটের সদস্যদের নিয়োগ করা যাবে না।
সাবেক ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর প্যাট্রিক লেহির ১৯৯৭ সালের একটি আইনের ভিত্তিতে এই অবরোধ আরোপ করা হচ্ছে। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য রয়েছে, এমন কোনো নিরাপত্তা বাহিনী, সামরিক বাহিনী বা পুলিশকে মার্কিন সামকির সহায়তা বা প্রশিক্ষণ প্রদান করা যাবে না।
মার্কিন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা ওয়ালা মিডিয়াকে বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো ৭ অক্টোবরের আগে ঘটেছে এবং তা ঘটেছে কেবল পশ্চিম তীরেই।
তবে আরো কয়েকটি সেনা ইউনিট এবং ইসরাইলি পুলিশ ইউনিটের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ থাকলেও তারা তাদের আচরণ সংশোধন করে নেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর একটি ইউনিটের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপের খবরে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি এক্স পোস্টে বলেন, আইডিএফের বিরুদ্ধে কোনোভাবেই অবরোধ আরোপ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, নেটজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নটি অতি উগ্র ইহুদিদের নিয়ে গঠিত। তাদের হাতে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৮০ বছর বয়স্ক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান ওমর আসাদ মারা যান। এ ধরনের আরো কিছু ঘটনা এই বাহিনী ঘটিয়েছে।
আসাদকে রামাল্লার কাছে তার গ্রামে হঠাৎ স্থাপিত একটি চেকপয়েন্টে গ্রেফতার করা হয়। তাকে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়, তার মুখে বাঁধা হয়। এপর সৈন্যরা মধ্যরাতে তাকে মাটিতে কয়েক ঘণ্টা ফেলে রাখে। পরে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
পরে এক তদন্তে ইসরাইলি বাহিনী জানায়, এটা ছিল একটি ‘বাহিনীটির নৈতিক ব্যর্থতা এবং সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করা। বিষয়টি মানুষের মর্যাদার ওপর মারাত্মক আঘাত ছিল।’
পরে নেটজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের কমান্ডারকে তিরষ্কার করা হয়, কোম্পানি কমান্ডার এবং প্লাটুন কমান্ডারকে বরখাস্ত করা হয়। তবে ঘটনার সাথে জড়িত সৈন্যদের কোনো শাস্তি ছাড়াই রেহাই দেয়া হয়।
সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট
Leave a Reply