1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

নারায়ণগঞ্জে শেখ রাসেল পার্কে পাখির নিরাপদ অভয়াশ্রম তৈরি করেছে নাসিক

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

গাছের ডালে ডালে পাখি বসবে, সেই পাখির কিচির মিচির আওয়াজ শুনবে পার্কে আগন্তুক মানুষ। এমন নয়নাভিরাম পরিবেশ তৈরি করতে পাখির জন্য বাসা বুনছে মানুষ। এদৃশ্য নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ শেখ রাসেল শিশুপার্কের। ১৮ একর জমিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নগরীতে এ পার্ক গড়ে তোলে। পার্কের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে লেক। যেখানে স্বচ্ছ পানি টলটল করছে।

একসময় যে স্থানে ফেলা হতো ময়লা আবর্জনা। যেখান দিয়ে মানুষ হাঁটাচলা করতো নাক চেপে ধরে। সেখানে বসেই এখন মনের আনন্দে হাওয়া খাচ্ছে মানুষ। গাছগাছালি সবুজ দৃশ্য দেখার পাশাপাশি এখন বাড়তি বিনোদন দিচ্ছে পাখির কিচির মিচির আওয়াজ। পাখিদের নিরাপদ অভয়াশ্রম গড়ে তুলতে তৈরি করা হচ্ছে পাখির বাসা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের দেওভোগের শেখ রাসেল পার্কে বাবুই পাখি যেন থাকতে পারে সেজন্য দুই শ’ বাবুই পাখির বাসা স্থাপন করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক)। খড়কুটো দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের এ বাবুই পাখির বাসাগুলো পার্কজুড়ে গাছের ডালে ডালে স্থাপন করা হয়।

নাসিক সূত্রে জানা গেছে, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পাখিরা যেন নির্ভয়ে এখানে এসে থাকতে পারে সেজন্য এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মূলত প্রাকৃতিক পরিবেশে যেন নগরবাসী এখানে সময় কাটাতে পারেন সেজন্য এ পার্ক করা। কিন্তু পার্কে পাখির কিচিরমিচির তেমন একটা না থাকায় পাখির কিচিরমিচির বাড়াতেই এহেন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পাখির বাসা স্থাপনে সহযোগিতা করার পাশাপাশি নিজের হাতে কিছু বাসা স্থাপন করেন নাসিক মেয়র ডা: সেলিনা হায়াৎ আইভীর ভাই আহমেদ আলী রেজা উজ্জ্বল। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পার্কে আসা দর্শনার্থীরা এটিকে পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে জানিয়েছেন।

দেওভোগ এলাকার গৃহবধূ রাবেয়া মিতু জানান, বাসার কাছে এত বড় একটা পার্ক আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। বিকেল হলেই আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে ঘুরতে আসি। এখন গাছের ডালে ডালে বাবুই পাখির বাসা শোভা পাচ্ছে। দেখতে খুবই ভালো লাগছে।
স্ত্রী ও দুই মেয়েসন্তান নিয়ে পার্কে ঘুরতে আসা ইউসুফ আল আজিজ জানান, শহরের বুকে এমন পার্ক গড়ে ওঠা আমাদের জন্য বাড়তি আনন্দের । বিকেলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসি। এখন গাছের ডালে পাখির বাসা দেখতে ভালো লাগছে।

জানা গেছে, পরিবেশবান্ধব ঘনসবুজ ঘেরা ছায়া ঢাকা, নির্মল পানিসমৃদ্ধ লেকবেষ্টিত নারায়ণগঞ্জ জিমখানার শেখ রাসেল পার্ক এখন নগরীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান। এর আয়তন প্রায় ১৮ একর। বর্তমান লেকটি একদা পরিত্যক্ত জলাশয়, ডোবা ছিল। প্রতিনিয়ত মানুষের বর্জ্য ফেলার কারণে লেকটি ডাম্পিং স্থান ও মশা মাছির প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়। এছাড়াও অবৈধ দখলের ফলে জিমখানা লেক এলাকার পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো মাদক ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ফলে লেক এলাকাটি দূষণ ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক ২০১০ সালে ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে (বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা) লেকটিকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় জনগণের দীর্ঘ দিনের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা: সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০১১ সালে জিমখানা লেক খনন, সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং স্বনামধন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের স্থপতিদের মাধ্যমে বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়।

এ নয়নাভিরাম কাজটি শেখ রাসেল পার্ক হিসেবে নামকরণের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমোদন নেয়া হয়। পার্কটি নারায়ণগঞ্জ নগরবাসীর একমাত্র বিনোদনকেন্দ্র। প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিপুলসংখ্যক লোক এখানে প্রকৃতির নির্মল পরিবেশ উপভোগ করার জন্য আসেন। লেকটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৭০ মিটার, প্রস্থ ৭৫ মিটার। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে শেখ রাসেল পার্কটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৫৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। লেকের চারপাশে ওয়াকওয়ে, স্ট্রিট লাইট, সিটিং প্যাভিলিয়ন ও পরিবেশবান্ধব সবুজ গাছপালা রোপণ করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের অবসর সময় কাটানোর জন্য চারটি ভিউইং ডেক ও ছয়টি ঘাটলা নির্মাণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, উন্মুক্ত পরিবেশে যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য উন্মুক্ত মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। লেকটির সৌন্দর্যবর্ধন করে দাঁড়িয়ে আছে শেখ রাসেলের ম্যুরাল। লেক এর দুই পাশে লোকজনের পারাপারের জন্য রয়েছে একটি নয়নাভিরাম ব্রিজ। খেলাধুলার জন্য একটি খেলার মাঠ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া পাবলিক টয়লেটের (পুরুষ ও মহিলা) কাজ চলমান আছে। অবশিষ্ট কাজের মধ্যে রয়েছে, বোট ক্লাব, সুইমিং পুল, ওয়াটার গার্ডেন, জিমন্যাস্টিক ক্লাব, ড্রাই ফাউন্টেন, স্কেটিং জোন, সাইকেল লেনসহ সৌন্দর্যবর্ধন কাজ। এ ছাড়াও পার্কের অভ্যন্তরে শিল্প সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের লক্ষ্যে বিদ্যমান চারুকলা ভবনটির স্থলে নতুনভাবে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত একটি পরিবেশবান্ধব চারুকলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com