আরব সাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজের ২৩ নাবিক ও ক্রুদের মধ্যে রয়েছেন নোয়াখালীর মোহাম্মদ আনারুল হক রাজু (২৯)। তিনি ওই জাহাজটিতে ‘এবি’ (অ্যাবল সিমেন) হিসেবে কর্মরত আছেন।
গতকাল মঙ্গলবার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর রাজু তার ভাইকে মোবাইল ফোনে একটি মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেনি স্বজনরা।
অপহৃত মোহাম্মদ আনারুল হক রাজু কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট রাজু।
রাজুর বড় ভাই জিয়াউল রনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে যাওয়ার পর গত নভেম্বরে সে সিঙ্গাপুর থেকে জাহাজে উঠেছিল। গতকাল সে আমার মোবাইলে একটি মেসেজ করে। যেখানে লেখা ছিল, “সোমালিয়ান পাইরেটস অনবোর্ড, বাঁচি থাকলে দেখা হবে, দোয়া কইরেন”।’
রাজুর মা দৌলত আরা বেগম বলেন, ‘গত ৮ বছর ধরে জাহাজের এবি হিসেবে কর্মরত আছে রাজু। সর্বশেষ প্রায় ৪ মাস আগে সে বাড়িতে এসেছিল। আমার ঘরটি ভাঙা ছিল, রাজু এখন পাকা ঘর করতেছে, ঘরের কাজ শেষ হলে তাকে বিয়ে করাবো। আমরা মেয়েও দেখতেছি। কিন্তু কালকে খবর পেলাম আমার রাজুসহ ২৩ জনকে তাদের জাহাজ থেকে ডাকাতরা নিয়ে গেছে।’
রাজুর পরিবারের স্বজনরা জানান, জাহাজের একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়েছে জিম্মিদের। রাতে তাদের সাহরি দেওয়া হয়েছিল। রাজুসহ সব অপহৃতকে জীবিত উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানান তারা।
এদিকে, অপহৃত ওই জাহাজটিতে মোহাম্মদ সালেহ আহম্মদ নামের নোয়াখালীর আরেকজন রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে তার বাড়ি জেলার সেনবাগ উপজেলায় জানা গেলেও বিস্তারিত জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ নামে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজটি সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে। এতে জাহাজে থাকা ২৩ নাবিক ও ক্রুকে জিম্মি করেছে জলদস্যুরা। গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানায় জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত। জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির স্টিল রি-রোলিং মিলস (কেএসআরএম) গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন।
Leave a Reply