পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিদেশী কূটনীতিকরা‘অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ এর মাধ্যমে দেশ ও দেশের অগ্রগতি সম্পর্কে আরো ভালোভাবে এবং কাছ থেকে জানতে পারবেন।
তিনি বলেন, কূটনীতিকরা যাতে আরো কাছ থেকে দেখতে পারেন, সেজন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর বাইরে পরিদর্শনের মাধ্যমে কূটনীতিকরা বাঙালি জাতির সামর্থ্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে সেই খবরগুলো তাদের দেশে পৌঁছাবেন। ফলে তা বিশ্বময় ছড়িয়ে যাবে।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে গণমাধ্যমের সাথে মত বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দু’দিনব্যাপী ‘অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রামে’র আওতায় প্রথম দিন আজ দুপুরে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার মিশন প্রধানদের নিয়ে চট্টগ্রামে নেভাল একাডেমি এবং কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শন শেষে ট্রেনে কক্সবাজার যান তিনি।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. নজরুল ইসলাম ও অন্যান্য কর্মকর্তারা কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা যেন আমাদের দেশকে আরো জানেন, দেশে যে বিরাট উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ হচ্ছে সেগুলো যেন তারা স্বচক্ষে দেখেন, সেকারণেই তাদেরকে চট্টগ্রামে আনা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে তারা কক্সবাজার যাবেন।
বিদেশী প্রতিনিধিদের এই পরিদর্শনে তাদের সাথে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই তারা বাংলাদেশকে আরো ভালোভাবে জানতে পারবেন, ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার সফরে এসেছেন তারা। আজ চট্টগ্রামে কয়েক ঘণ্টা কাটালেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম রোড টানেল তারা দেখলেন।
তিনি বলেন, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার কোথাও নদীর তলদেশ দিয়ে রোড টানেল নেই। সেটি তারা দেখলেন। এই যে অসাধারণ উন্নয়ন, যেগুলো আজ থেকে ১৫ থেকে ২০ বছর আগে মানুষ কল্পনাও করেনি, সেগুলো আজকে বাস্তব এবং সেই বাস্তবতা আজকে কূটনীতিকরা নিজের চোখে দেখেছেন।
কূটনীতিকদের ট্রেনে করে কক্সবাজার নেয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ট্রেন লাইন হয়েছিল ১৯৩০ সালে। তারও আগে ব্রিটিশ আমলে ১৯০০ সালের পরপরই চট্টগ্রাম থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ট্রেন লাইনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এরপর দেশ ভাগ হলো। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। কারণ তাকে সাড়ে তিন বছরের মাথায় হত্যা করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, এই জনপদের মানুষ ১২৫ বছর আগে যে স্বপ্ন দেখেছিল, আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেটি বাস্তবায়িত হয়েছে। এই অসাধারণ কাজ কূটনীতিকদেরকে দেখাবার জন্য চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে করে কক্সবাজার নিয়ে এসেছি। তাদেরকে এখানে আনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা যেন বাংলাদেশকে জানে এবং চেনে, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত যে আমাদের দেশে, এই খবরটা যেন তাদের মাধ্যমে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। এবং বাংলাদেশের সৌন্দর্য ও উন্নয়ন সম্পর্কে তারা যেন ভালো করে জানতে পারে, সেজন্যই তাদেরকে আমরা নিয়ে এসেছি।
বিদেশি কূটনীতিকদের সাথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কথাবার্তা হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের সাথে তো কথাবার্তা আমাদের সবসময়ই হয় এবং তারা অনেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন। এবং এখনো যদি তারা সুযোগ পায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসোভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ফ্রান্স এবং এফএও, আইইউটি, একেডিএন আন্তুর্জাতিক সংস্থাগুলোর ২৪ জন মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনৈতিক সদস্য এই আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
সূত্র : বাসস
Leave a Reply