যশোরের বেনাপোল সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোহাম্মদ রইসউদ্দিনের (৩৫) মরদেহ দুইদিন পর ফেরত দিয়েছে বিএসএফ।
আজ বুধবার বেলা ১১টায় শার্শার শিকারপুর সীমান্তের মুক্তিযোদ্ধা খামার পাড়া ও ভারতের গাঙ্গুলিয়া সীমান্তের ২৮ নং মেইন পিলারের কাছে পতাকা বৈঠকের পর বিজিবির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে রইসউদ্দিনের মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যশোর ৪৯ বিজিবির সিও জামিল আহম্মেদ ও ভারতীয় বিএসএফের ১০৭ ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন ভক্তসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
বর্তমানে রইসউদ্দিনের মরদেহ যশোর সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে গত সোমবার (২২ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বেনাপোলের ধান্যখোলা সীমান্তের বিওপির জেলেপাড়া পোস্টসংলগ্ন এলাকায় বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত হন রইসউদ্দিন। তিনি ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির বেনাপোল সীমান্তের ধান্যখোলা জেলেপাড়া ক্যাম্পে সিপাহি পদে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায়।
বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জামিল জানিয়েছিলেন, গত সোমবার ভোর ৫টার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা বিওপির টহল দল সেখানকার জেলেপাড়া পোস্টসংলগ্ন এলাকায় ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারিকে সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখেন। বিজিবির টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করেন। চোরাকারবারিরা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি টহল দলের সদস্য সিপাহি মোহাম্মদ রইসউদ্দিন তাদের ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরে তারা জানতে পারেন তিনি বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর পরই ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয়। এর পর তারা জানতে পারেন সিপাহি রইসউদ্দিন মারা গেছেন। এ বিষয়ে বিএসএফকে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি এবং কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়। একই সঙ্গে তার মরদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যাপারে সব পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে বলে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জামিল জানান।
নিহত রইসউদ্দিনের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের শ্যামপুর গ্রামের বাড়িতে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন পরিবারসহ আত্মীয়স্বজনরা। দুই সন্তানের জননী স্ত্রী নাসরিন খাতুন স্বামী হারিয়ে শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন। আড়াই বছরের রাফিয়া ও চার মাসের হাসান জানে না কী হয়েছে তার বাবার। বাড়িতে এত মানুষ কেন?
Leave a Reply