আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার (২০ ডিসেম্বর, ২০২৩) সিলেটে আনুষ্ঠানিকভাবে তার দলের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি হযরত শাহজালাল (র.) ও হযরত শাহ পরান (র.) এর মাজার জিয়ারত করেন।
বিকেল ৩টায় সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা।
বক্তব্যে তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে আমরা যাদের নৌকা মার্কার প্রার্থী দিয়েছি, তাদেরকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। আপনাদের কাছে সেটাই আমার আহ্বান।”
তিনি বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার ফলে জনগণ সুফল পাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সোনার বাংলা গড়ে তোলা এবং সেই লক্ষ্যেই আমি নিরলস কাজ করছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ নৌকায় ভোট দিলে এবং আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পারলে, সমগ্র বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করে তুলব। আর কোন মানুষ গৃহহীন, ঠিকানাবিহীন এবং ভূমিহীন হবে না। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে।”
তিনি বলেন, “আমি আর আমার একমাত্র ছোট বোন। সবকিছু হারিয়ে এবং আমার ছোট বাচ্চাদের তাদের মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করে, আমি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসেছি শুধু আমার বাবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ করতে।”
গত ১৫ বছরে তার সরকারের বাস্তবায়িত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসলে সিলেটে মেট্রোরেল চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করবে, বন্যা রোধে নদীর তীর উন্নয়ন, ঢাকা-সিলেট রুটে ডাবল ট্র্যাক রেললাইন বসানো, সিলেটের প্রবেশদ্বার খ্যাত ক্কীন ব্রিজের পাশে আরেকটি ব্রিজ নির্মাণ, কুশিয়ারা, মনু ও অন্যান্য নদীতে ড্রেজিং পরিচালনার পাশাপাশি এখন ৫০ বছর পর সুরমা নদীর ড্রেজিং করা হচ্ছে এবং সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার ফলে সিলেট আজ ব্যাপক উন্নয়ন দেখছে। সিলেটের মানুষ আজ উন্নত জীবন-যাপন করছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা জানি, বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়। কিন্তু তারা পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরেছে। তারা আর কখনো ক্ষমতায় আসতে পারবে না।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে বাড়ি দিতে পেরেছি। তাদের চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক দিয়েছি। অর্থাৎ আমরা মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করছি। যা বাকি আছে তাও করব ইনশাআল্লাহ।”
শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার উপস্থিতিতে সিলেটবাসী আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে। তারা প্রধানমন্ত্রীকে জয়ধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানায়।
সমাবেশের পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সিলেট শহরে আনন্দ মিছিল বের করে।
Leave a Reply