ব্যক্তিত্ব গঠনে উত্তম কর্ম সম্পাদনের গুরুত্ব অপরিসীম। আর যদি তা হয় রাসূলুল্লাহ সা:-এর সুন্নাহ-আদর্শ তথা হাদিস থেকে তাহলে তো কথাই নেই। নিম্নে আমরা জানব হাদিসের বর্ণনায় উত্তম দশ আমল।
ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ফজরের দুই রাকাত (সুন্নাত) দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার থেকে উত্তম।’ (মুসলিম : ৭২৫)
প্রথম কাতারে নামাজ : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, পুরুষের কাতারের মধ্যে উত্তম হলো প্রথম কাতার এবং নিকৃষ্ট হলো শেষ কাতার। (মুসলিম : ৪৪০)
উল্লেখিত শেষ কাতারকে নিকৃষ্ট বলা হয়েছে মূলত ফজিলত বোঝানোর জন্য। প্রকৃতপক্ষে নিকৃষ্ট নয়, সব কাতারই সমান তবে গুরুত্ব দিতে হবে সামনের কাতারকে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই প্রথম কাতারে আল্লাহ তায়ালা রহমত বর্ষণ করেন এবং তাদের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন।’ (আবু দাউদ : ৬৬৪)
নামাজে বিনয়ী হওয়া : বিনয়ী শব্দের বিপরীত হলো অহঙ্কার। অহঙ্কার থেকে মুক্ত ইবাদত আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি, যে নামাজের মধ্যে নিজের কাঁধ নরম করে রাখে। অর্থাৎ অহঙ্কারমুক্ত থাকে। (আবু দাউদ : ৬৭২)
নামাজের শেষে তাসবিহ পাঠ : প্রত্যেক নামাজের পর তিন তাসবিহ পাঠের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু নেক কাজের আদেশ দেবো? যারা নেক কাজে তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী, তাদের পর্যায়ে পৌঁছতে সহায়ক হবে। তা হলো তোমরা প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার করে তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং তাকবির (আল্লাহু আকবার) পাঠ করবে।’ (বোখারি : ৮৪৩)
কোরআন পাঠ ও পাঠদান : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়।’ (বোখারি : ৫০২৭)
অসহায় লোকদের সাহায্য করা : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, নিচের হাত থেকে উপরের হাত উত্তম। কেননা, উপরের হাত হলো দানকারীর হাত, নিচের হাত হলো গ্রহণকারীর হাত।’ (বোখারি : ১৪২৯)
মানুষকে খাদ্য খাওয়ানো ও সালাম দেয়া : এক ব্যক্তি নবী সা:-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামের কোন আমলটি উত্তম? তিনি বলেন, মানুষকে খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম প্রদান করা।’ (বোখারি : ২৮)
সুন্দর চরিত্র : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সে, যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর।’ (বোখারি : ৩৫৫৯)
বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, কোনো মুসলিমের পক্ষে বৈধ নয় তার কোনো ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্কচ্ছেদ রাখা। যে তাদের দুজনের দেখা- সাক্ষাৎ হলে একজন একদিকে আরেকজন অন্যদিকে চেহারা ঘুরিয়ে নেয়। তাদের মধ্যে উত্তম ওই ব্যক্তি, যে প্রথম সালাম প্রদান করবে। (বোখারি : ৬২৩৭)
পরিবারের সাথে উত্তম আচরণ : রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি সে, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। (তিরমিজি : ৩৮৯৫)
লেখক :
ইমাম ও খতিব, আবারপাড়া জামে মসজিদ, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা
Leave a Reply