কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসন। বর্তমানে চার শতাধিক পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপে অবস্থান করছে, তারা সবাই সেখানে আটকা পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এর কারণে সমুদ্র বন্দরসমুহে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে কক্সবাজারসহ দেশের চার বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে বুধবার দুপুরের পর থেকে আবহাওয়া গুমোট হয়ে ছিল। সাগর ক্রমেই উত্তাল হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার মো: জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আবহাওয়ার সতর্ক সঙ্কেতের বার্তা জাহাজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ জাহাজ ঘাটের ইজারাদারের উশুল আদায়কারী সূত্র জানায়, টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কেয়ারি সিন্দাবাদে ১৩২ জন, আটল্যান্টিকে ৮৯ ও এমভি বার আউলিয়ায় ২৯৮ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গেছে। জাহাজে করে বিকেল ৩টায় তিন শতাধিক পর্যটক ফেরত এলেও অন্যরা দ্বীপে রয়ে গেছে। আগের দিন মঙ্গলবার বেড়াতে গিয়ে রাত-যাপনের জন্য ছিলেন দেড় শতাধিক পর্যটক। ফলে দ্বীপে এখন চার শতাধিক পর্যটক অবস্থান করছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে আবহাওয়ার সতর্ক সঙ্কেত জারি হওয়ায় পর্যটকেরা আটকা পড়েছে। বুধবার বিকেল থেকে আবহাওয়া গুমোট হয়ে আছে। সাগর ধীরে ধীরে উত্তাল হচ্ছে। সন্ধ্যার পর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছিল।
কেয়ারি সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক (হিসাব) মো: শাহ আলম ও এমভি বার আউলিয়া জাহাজের টেকনাফের ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম জানান, বর্তমানে এ নৌপথে চারটি জাহাজ চলাচল করে। অবরোধের কারণে পর্যটক কমে যাওয়ায় দৈনিক তিনটি জাহাজ চলাচল করছিল। বর্তমানে কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন পর্যটক পরিবহন বন্ধ রেখেছে।
ইউএনও মো: আদনান চৌধুরী বলেন, আবহাওয়া অধিদফতর ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত জারি করায় বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ, স্পিডবোট, কাঠের বোট বা যেকোনো নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে অবস্থানরত সকল পর্যটককে নিরাপদে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply