মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ মিন্ট সোয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সীমান্ত অঞ্চলে সহিংসতা দমনে অকার্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে দেশ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের এক জরুরি বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। খবর রয়টার্স।
মিয়ানমারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের (এসএসি) প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে বলেন, এই সময়ে খুব সতর্কতার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রাষ্ট্রের জন্য এ সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন তাতমাদোর (সেনাবাহিনী) পুরো জাতির সমর্থন প্রয়োজন। কারণ সীমান্তের বিভিন্ন অংশে যে সব সহিংস ঘটনা ঘটছে, তা যদি কার্যকরভাবে দমন না করা যায়, তাহলে দেশ কয়েক টুকরা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সম্প্রতি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য হয় মিয়ানমারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এমন কিছু সীমান্তবর্তী শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা সরকার। এসব এলাকায় সহিংসতায় কয়েকজন চীনা নাগরিক হতাহতের ঘটনাও ঘটছে, যাতে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন সাবেক জেনারেল মিন্ট সোয়ে। ওই সময় থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে জান্তা সরকারকে। তবে সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতিকেই গত আড়াই বছরের মধ্যে জান্তা সরকারের জন্য সবচেয়ে কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা গেছে, চীন সীমান্তবর্তী শান রাজ্যের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে সরকারবিরোধী অন্য সশস্ত্র সংগঠনগুলো। এর ফলে এরই মধ্যে তারা কয়েক ডজন সামরিক পোস্ট দখল করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে সীমান্ত চৌকি ও চীনের সাথে স্থলপথে বাণিজ্য পরিচালনাকারী রুটগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ওই জায়গা পুনরুদ্ধারে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল হামলা চালিয়েছে। হামলার তীব্রতায় ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু সরকার সেখানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দখলকৃত এলাকা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। সেখানে সরকারি বাহিনীর একজন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং কিয়াউ লুইনসহ শত শত সেনা সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। জেনারেল অং কিয়াউ অভ্যুত্থানের পর থেকে যুদ্ধে নিহত সেনাবাহিনীর সবচেয়ে সিনিয়র অফিসার।
Leave a Reply