ইসরাইলি জনসাধারণের কাছেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা তলানিতে নেমে গেছে। এখন যদি ভোট হয় মাত্র কিছু দিন আগে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা নেতানিয়াহু ভয়াবহভাবে হেরে যাবেন বলে জনমত জরিপে দেখা গেছে।
জরিপে দেখা যায়, এখন নির্বাচন হলে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি মাত্র ১৮ ভাগ ভোট পাবে। অথচ, দলটি ৩২ ভাগ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় এসেছিল।
জরিপে দেখা যায়, ক্ষমতাসীন উগ্র জাতীয়তাবাদী জোটটি মাত্র ৪২টি আসন পাবে। আর বিরোধীরা পাবে ৭৮টি আসন।
উল্লেখ্য, ১২০ আসনবিশিষ্ট ইসরাইলি পার্লামেন্টে সরকার গঠন করতে প্রয়োজন হয় ৬০টির বেশি আসনের।
যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান উপেক্ষা করেই গাজায় হামলা অব্যাহত ইসরাইলের
ইসরাইল গাজায় অবরোধ ও হামলা অব্যাহত রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেই ইসরাইল শনিবার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স বহরে এবং যে স্কুলে লোকজন আশ্রয় নিয়েছে সেখানেও হামলা চালিয়েছে।
ইসরাইল সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সাময়িকভাবে মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
এদিকে হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তাদের নির্মূলের লক্ষে ইসরাইলি বাহিনী গাজার বৃহত্তম নগরী ঘিরে রেখেছে।
গাজা শহরের উত্তরে ওসামা বিন জায়েদ বালক বিদ্যালয়ে ইসরাইল কামানের গোলা নিক্ষেপ করলে ২০ জন নিহত হয়েছে বলে হামাস দাবি করেছে।
ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে হতাহতদের উদ্ধারে নিয়োজিত অ্যাম্বুলেন্স টিমের ওপরও হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরাইলের অব্যাহত হামলায় এ পর্যন্ত ৯,২০০ লোক নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
অ্যান্টনি ব্লিংকেন তেলআবিবে হামাসের কাছ থেকে বন্দীদের উদ্ধারে সাময়িকভাবে মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্যে ইসরায়েলকে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন। এছাড়া যুদ্ধবিরতির ফলে গাজার বিপর্যস্ত জনগণের মাঝে ত্রাণ বিতরণও সম্ভব হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কিন্তু নেতানিয়াহু এ ধরনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, জিম্মিদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত কোন যুদ্ধবিরতি নয়।
এদিকে ব্লিংকেন শনিবার আম্মানে জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সাথে বৈঠক করবেন।
গাজায় ইসরাইলি হামলায় অব্যাহতভাবে বেসামরিক নাগরিক হতাহতের কারণে আরব বিশ্বের ক্ষুদ্ধতার কারণে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এদিকে ইসরাইলে কর্তৃপক্ষ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি কর্মীকে গাজায় ফেরত যাওয়ার জন্যে চাপ দিচ্ছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি কর্মী ইসরাইলে আটকা পড়েছে।
এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার সংস্থা।
মুখপাত্র এলিজাবেথ থ্রোশেল জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। আমরা জানি না কোথায়, তাদের যাওয়ার আদৌ বাড়ি আছে কি-না।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধ শুরুর আগে গাজার ১৮ হাজার ৫ শ’ ফিলিস্তিনীর ইসরাইলে কাজ করার অনুমতি ছিল।
কিন্তু ৭ অক্টোবর ইসরাইলে ঠিক কতজন ফিলিস্তিনি কর্মী ছিল তা স্পষ্ট নয়।
সূত্র : আল জাজিরা, এএফপি এবং অন্যান্য
Leave a Reply