নিপা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে ভারতের কেরালা রাজ্যের সাতটি গ্রামকে ‘কনটেনমেন্ট জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল কয়েক দিন আগেই। পাশাপাশি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল স্কুলও। ফের কি লকডাউনের পরিস্থিতি? নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘিরে পুরোদস্তুর আতঙ্কের আবহ কেরালায়। আর এই আবহেই নিপা ভাইরাস সম্বন্ধে যা জানা গেল তাতে আতঙ্কের আবহ সারা ভারতেই। বলা হচ্ছে, কোভিড ভয়ঙ্কর ছিল, কিন্তু নিপা আরো ভয়ঙ্কর! নিপার মৃত্যুহার করোনার ৪০ গুণ বেশি!
ভারতের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান আইসিএমআর-এর ড. রাজীব বাহল বলেছেন, কোভিডের মর্টালিটি রেট ছিল ২-৩ শতাংশ, নিপার মর্টালিটি রেট এর বহু-বহু গুণ বেশি- ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ! ড. রাজীব বাহল বলেছেন, এটা অসম্ভব রকমের বেশি মাত্রার মৃত্যুহার। ফলে সাবধান হতেই হবে সব পক্ষকে।
কয়েক দিন আগেই কোঝিকোড় জেলার সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ‘কনটেনমেন্ট জোন’ ঘোষণা করা হয়েছিল, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কয়েকটি স্কুলও। সঙ্গে সংক্রমিত এলাকার কিছু কিছু অফিস-কাছারিও বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। যা খুব স্বাভাবিকভাবেই করোনা-লকডাউনের স্মৃতি উসকে দিয়েছে। কেরালার কোঝিকোড়ে ‘নিপা’ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন কেরালা প্রশাসন। উদ্বিগ্ন ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও। ভারত সরকার কেরালায় এক্সপার্ট টিম পাঠিয়ে দিয়েছিল সাথে সাথে। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুক মাণ্ডব্য কেরলের দুটি মৃত্যুকে ‘আনন্যাচারাল ডেথস’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছিলেন, কোঝিকোড় জেলা প্রশাসন জেলায় একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে। পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনকে সতর্কতামূলক পন্থা হিসেবে মাস্ক পরতেও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী-সহ যারা হাসপাতালগুলোতে নিপা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন তাদের পিপিই কিট পরতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষকে কারণে অকারণে যখন-তখন হাসপাতালে বা তার কাছাকাছি এলাকায় যেতে নিষেধ করেছেন তিনি। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছিলেন, তাঁরা এই দুটি মৃত্যুকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনিও রাজ্যবাসীকে সতর্ক হতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, নিপায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে এমন ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা এসেছে ইতিমধ্যেই তাদের চিহ্নিত করে চিকিৎসা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ ভারতে ‘নিপা ভাইরাস’ প্রথম চিহ্নিত হয়েছিল কেরালার কোঝিকোড়েই। সেটা ছিল ২০১৮ সালের ১৯ মে।
সূত্র : জি নিউজ
Leave a Reply