ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে শান্তি ফিরছেই না। ফের নতুন সংঘর্ষে উত্তাল রাজ্যটি। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার দুপুরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা পুলিশের ওপর গুলি চালিয়েছে।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্দুকধারীর গুলিতে মণিপুরের পুলিশ উপ-পরিদর্শক নিহত হয়েছেন। সেইসঙ্গে আহত হয়েছে দুই বেসামরিক লোক। রাজ্যের চুরাচাদপুর জেলায় ঘটেছে এ ঘটনা।
চলতি বছরের মে মাস থেকেই মণিপুর রাজ্য উত্তাল। সবশেষ এ হতাহতের ঘটনায় রাজ্যটিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৯ জনে দাঁড়াল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্যের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মণিপুরের চিংফেইতে নিযুক্ত পুলিশ উপ-পরিদর্শক ওংমান হাওকিপকে বুধবার আনুমানিক দেড়টায় মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। কুকি অধ্যুষিত জেলাটিতে এ হামলায় দুইজন বেসামরিক নাগরিকও আহত হন। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে রাজ্যের পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মণিপুরের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় হিন্দু মেইতেই জনগোষ্ঠীর। এদের অনেকেই বৈষ্ণব। রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ তারাই। অন্যদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করেন যেসব নাগা এবং কুকি উপজাতির মানুষ, তাদের একটা বড় অংশ খ্রিস্টান। এরকম ৩৩ টি উপজাতি গোষ্ঠীর বসবাস রাজ্যের ৯০ শতাংশ পাহাড়ি অঞ্চলে।
গত কয়েক বছর ধরেই মেইতেইরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন যে তাদের তপশিলি উপজাতি (এসটি) হিসাবে শ্রেণীভুক্ত করার জন্য। ভারতে যে সব সম্প্রদায় ঐতিহাসিকভাবে সমান সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে – তাদেরকে এসটি শ্রেণীভুক্ত করে তাদের জন্য সরকারি চাকরি, কলেজে ভর্তি ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির আসন সংরক্ষণ করা হয়।এরপর মে মাসে মণিপুর হাই কোর্ট রাজ্য সরকারকে মেইতেই সম্প্রদায়ের দাবি বিবেচনার নির্দেশ দেয়। কিন্তু রাজ্যের অন্য উপজাতিগুলোর মধ্যে এতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয় যে মেইতেইদেরকে এসটি মর্যাদা দেওয়া হলে তাদের চাকরির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে। এর পরেই সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। আর তা এখনো চলছে।
Leave a Reply