আমাদের সমাজে মায়ের মর্যাদা ও অধিকারের কথা যত বেশি গুরুত্বের সাথে প্রচার প্রচারণা হয় এবং আমল করা হয়; বাবার ব্যাপারে তা হয় না। একজন সন্তানের জন্য মায়ের মাতৃত্ব যতটা মহত্ত্বপূর্ণ বাবার শ্রম ও ভালোবাসা ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সন্তান প্রতিপালনে বাবা-মা কারো অবদানকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
আমাদের বেড়ে ওঠার পেছনে উভয়েরই সমান ভূমিকা রয়েছে। উভয়েই সমান মর্যাদার অধিকারী এবং সন্তানের কাছে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, আবুদ দারদা রা: বললেন, রাসূলুল্লাহ সা:-কে আমি বলতে শুনেছি, জান্নাতের সর্বোত্তম দরজা হচ্ছে বাবা। তুমি ইচ্ছা করলে এটা ভেঙে ফেলতে পার অথবা এর রক্ষণাবেক্ষণও করতে পার। (তিরমিজি : ১৯০০) এর দ্বারাই বাবার মর্যাদা ও গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে যায়। অপর হাদিস হজরত আবু হুরাইরা রা: থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, সন্তান কোনো অবস্থাতেই তার বাবার সম্পূর্ণ অধিকার আদায়ে সক্ষম নয়। কিন্তু সে তার বাবাকে গোলাম অবস্থায় পেলে এবং তাকে কিনে মুক্ত করে দিলে তবে সামান্য অধিকার আদায় হয়। (তিরমিজি : ১৯০৬) এর দ্বারাও বাবার গুরুত্ব ও মর্যাদা সহজেই অনুধাবন করা যায়। শুধু বাবা নয়, বাবার মৃত্যুর পর তার বন্ধুদের সাথেও সৎ আচরণ করার কথা বলা হয়েছে।
ইবনু উমার রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা:-কে আমি বলতে শুনেছি, সর্বাধিক সাওয়াবের কাজ হচ্ছে বাবার বন্ধু-বান্ধবদের সাথেও সম্পর্ক বজায় রাখা। (তিরমিজি : ১৯০৩) হাদিসের ব্যাপকতার ভিত্তিতে যেখানেই বাবা-মা একজনের কথা বলা হয়েছে সেখানেই আমাদেরকে উভয়ই উদ্দেশ্য নেয়া দরকার। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আমাদের সবাইকে বাবা-মা উভয়ের সাথে উত্তম আচরণ করার তৌফিক দান করুক। -আমিন।
লেখক :
শিক্ষার্থী, আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুলউলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম
Leave a Reply