দৃশ্যত চীনকে কোণঠাসা করতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী বাণিজ্য করিডোরের সম্ভাবনা খুলে গেল ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে। সব ঠিক থাকলে ভবিষ্যতে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ রেল ও নৌপথ চালু হতে যাচ্ছে। ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, ইসরাইসল ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াবে এই করিডোর।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত বন্দর, রেলপথ, বিদ্যুৎ, ডেটা নেটওয়ার্ক এবং হাইড্রোজেন পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারতের সাথে বাণিজ্য করিডোর তৈরি করতে আগ্রহী। মূল্য লক্ষ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও পাশাপাশি দীর্ঘদিনের শত্রু ইসরাইল এবং সৌদি আরবের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপনের ভাবনাও রয়েছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় একমত দেশগুলোর আশা করছে, এর ফলে দেড় শ’ কোটি জনসংখ্যার ভারতের বিপুল বাজার আরো বেশি করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যক্ষেত্র হয়ে উঠবে। লম্বা করিডরের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে উঠল চাঙ্গা হবে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিও। পাশাপাশি ইসরাইল এবং উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্পর্ক অনেকটাই স্বাভাবিক হবে৷
উচ্চাকাঙ্ক্ষী বাণিজ্য করিডোর সম্পর্কে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মন্তব্য, ‘বিরাট পরিকল্পনা, ঐতিহাসিক ভাবনা।’ উল্লেখ্য, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পকে মোকাবেলার জন্য ওয়াশিংটন যে বিকল্প নিয়ে চিন্তা করছিল, এটি হবে তারই অংশবিশেষ।
ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইনের বক্তব্য, ‘ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর রেল ও কেবল যোগাযোগের থেকেও বড় ব্যাপার।’ এই বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মোদির বক্তব্য, ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর একসাথে দেখা একাধিক দেশের একটি উজ্জ্বল স্বপ্ন। যা বাস্তবায়িত হলে ইতিহাস তৈরি হবে। এই করিডোর একাধিক মহাদেশজুড়ে মানুষের প্রচেষ্টা এবং ঐক্যের উদাহরণ হয়ে উঠবে।
নয়া দিল্লি থেকে আল জাজিরার ক্যাটরিনা ইয়ু বলেন, কর্মকর্তারা এই চুক্তিকে ‘গেম-চেঞ্চার’ হিসেবে অভিহিত করছেন।
তিনি বলেন, এই চুক্তির কথা ঘোষণার সময় চীনা প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে এটি চীনের বিশাল বেল্ট অ্যান্ড রোড অবকাঠামো প্রকল্পের প্রতিদ্বন্দ্বী। উল্লেখ্য যে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপকে সংযুক্ত করতে ২০১৩ সালে চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ গ্রহণ করে। ফলে জি২০-এ গৃহীত পরিকল্পনাটি কার্যত চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী।
সূত্র : আল জাজিরা ও অন্যান্য
Leave a Reply