ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী রুশ প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার গ্রুপকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। এ বিষয়ে আজ বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে একটি খসড়া আদেশ পেশ করা হবে। যা পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে ওয়াগনারের সদস্য হ
যুক্তরাজ্যের হোম অফিস বলেছে, ওয়াগনারের কার্যকলাপের প্রকৃতি ও মাত্রা এবং বিদেশে ব্রিটিশ ‘নাগরিকদের জন্য তাদের হুমকির কারণে’ সন্ত্রাস আইন ২০০০-এর অধীনে গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দলটিকে নিষিদ্ধ করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকার কয়েক মাস ধরে সংসদ সদস্যদের চাপের মুখে পড়েছিল।
স্বরাষ্ট্র সচিব সুয়েলা ব্রাভারম্যান বলেছেন, ‘ওয়াগনার একটি সহিংস ও ধ্বংসাত্মক সংগঠন। এটি বিদেশে ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়ার সামরিক হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ওয়াগনার লুটপাট, নির্যাতন ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় এর কার্যক্রম বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই আমরা এই সন্ত্রাসী সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করছি এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে যেখানেই পারি সাহায্য করে যাচ্ছি।’
চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্যের বিচার বিভাগীয় মন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছিলেন, ‘ইউক্রেন এবং সারা বিশ্বে ভয়ঙ্কর নৃশংসতার জন্য দায়ী ওয়াগনার।’ তাই তিনি সরকারকে গ্রুপটিকে নিষেধাজ্ঞার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার খসড়া আদেশকে স্বাগত জানিয়ে ল্যামি সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, ‘যদিও এটি দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা, তবে সরকার শেষ পর্যন্ত কাজ করেছে এটাকে স্বাগত জানাই। এখন সরকারের উচিত পুতিনকে তার আগ্রাসনের অপরাধে বিচার করার জন্য একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করা।’
ওয়াগনার ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পাশাপাশি সিরিয়া, লিবিয়া ও মালি সহ আফ্রিকার দেশগুলোতে কাজ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এর যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের নাগরিকদের হত্যা ও নির্যাতন সহ একাধিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
ওয়াগনার একটি বেসরকারি রুশ ভাড়াটে বাহিনী। ক্রেমলিনের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় এটি গড়ে তুলেছেন ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। গ্রুপটির সদস্যের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। এদের অনেকেই রুশ নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক সদস্য।
ওয়াগনার প্রধান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল ওয়াগনার সেনারা। তবে রুশ সামরিক নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ ছিল প্রিগোজিনের।
গত জুনে তিনি রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্বল্পস্থায়ী সশস্ত্র বিদ্রোহ করেছিলেন। ওই বিদ্রোহ পুতিনের ২৩ বছরের শাসনামলের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। পরে পুতিনের ঘনিষ্ঠ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় মস্কো অভিমুখে যাত্রা স্থগিত করেন প্রিগোজিন। এর মাত্র দুই মাস পরে গত ২৩ আগস্ট এক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন ওয়াগনার প্রধান এবং তাকে সেন্ট পিটার্সবার্গে সমাহিত করা হয়।
গ্রুপটির নাম এখন যুক্তরাজ্যের অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠন যেমন হামাস এবং বোকো হারামের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
ওয়া বা ওয়াগনারকে সমর্থন করা হবে অবৈধ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
Leave a Reply