1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন

রেমিট্যান্স কমেছে অস্বাভাবিক হারে

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

– রিজার্ভের ওপর চাপ আরো বেড়ে যাবে
-টাকা পাচার ঠেকাতে না পারলে বাড়বে সঙ্কট : ড. আহসান এইচ মনসুর

দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের অন্যতম প্রধান মাধ্যম প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহ ক্রমেই কমে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেই আগের বছরের তুলনায় রেমিট্যান্সে ভাটা পড়ে গেছে। তবে সবচেয়ে কমেছে গত আগস্ট মাসে। বিদায়ী মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরে এসেছিল ২০৪ কোটি ডলার। এ হিসাবে এক মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে সাড়ে ২১ শতাংশ। শুধু তাই নয়, জুলাইয়ের তুলনায়ও আগস্টে কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।

রেমিট্যান্স প্রবাহ এ অস্বাভাবিকি হারে কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো মুদ্রা পাচার। এ মুদ্রা পাচার ঠেকাতে না পারলে সামনে আমাদের আরো সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হবে। তিনি বলেন, দেশে যখন ডলার সঙ্কট চলছে তখন বেশি হারে বৈদেশিক মুদ্রা আসার কথা ছিল। কিন্তু হচ্ছে উল্টো। রেমিট্যান্স প্রবাহ না বেড়ে বরং কমে যাচ্ছে। এতে রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়ে যাচ্ছে। আর এ ভাবে চলতে থাকলে সামনে বৈদেশিক মুদ্রার দায় মেটানো কষ্টকর হবে। তিনি বলেন, ডলার সঙ্কট বেড়ে গেলে টাকার মান কমে যাবে। আর টাকার মান কমে গেলে সমপরিমাণ পণ্য আমদানি করতে বেশি অর্থ খরচ করতে হবে। এতে বেড়ে যাবে মূল্যস্ফীতি। তিনি বলেন, এ জন্য নীতিনির্ধারকদের আগে ঠিক করতে হবে কী করণীয়। কারণ, রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে, নিরাপত্তার অভাব দেখা দিলে মানুষ দেশে বিনিয়োগ করতে ভয় পায়। কষ্টার্জিত অর্থের নিরাপত্তার জন্য বিদেশে টাকা পাচার করে। এটা ঠেকানোর জন্য নীতির পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় আমাদের বড় সঙ্কট এড়ানো সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে বিদায়ী মাসে অর্থাৎ আগস্টে। যেমন, গত মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ২.০২ বিলিয়ন ডলার। এপ্রিলে কমে নেমেছিল ১.৬৯ বিলিয়ন ডলার। মে’তেও আগের মাসের প্রায় সমান অর্থাৎ ১.৬৯ বিলিয়ন ছিল। জুন ছিল ২.২০ বিলিয়ন ডলার। এর পর আবার ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। জুলাইতে রেমিট্যান্স আসে ১.৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর গত আগস্টে কমে নেমেছে ১.৬ বিলিয়ন ডলারে। তবে পয়েন্ট টু পয়েন্ট অর্থাৎ গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইতে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছিল প্রায় ৬ শতাংশ, সেখানে আগস্টে কমেছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ২১ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশ থেকে প্রতি মাসেই বিদেশে শ্রমিক যাওয়ার হার বাড়ছে। বিপরীতে বেশি হারে রেমিট্যান্স আসার কথা ছিল, কিন্তু হচ্ছে উল্টো। এর একমাত্র কারণ হলো বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে না। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার হচ্ছে। আর এ কারণেই খোলা বাজারে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। খোলা বাজারে প্রতি ডলারের বিপরীতে ক্ষেত্র বিশেষ ১১৮ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হচ্ছে। যেখানে আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। যদিও আমদানিকারকরা বলছেন, ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে কোনো ব্যাংকেই ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। হুন্ডির কারণেই ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কম আসছে। এ কারণে গত সপ্তাহে ৭টি মানি এক্সচেঞ্জের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর ১০টি মানি চেঞ্জারের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।

এ দিকে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ায় ডলারের ওপর চাপ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই এশিয়ান ক্লিয়ারিং হাউজের (আকু) দায় পরিশোধ করতে হবে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। আর এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাবে। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত ছিল বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রাখতে হবে। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। নীতি সহায়তা দিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে না পারলে সামনে কঠিন বিপদ এড়ানো সম্ভব হবে না বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com