পবিত্র কুরআর আল্লাহ তায়ালার বাণী। এতে রয়েছে মানুষের জন্য সঠিক পথের দিশা এবং প্রতিপালকের পক্ষ থেকে হেদায়াত। মানুষ যদি সে অনুযায়ী চলে তাহলে তার জন্য রয়েছে উভয় জগতের সফলতা। দুনিয়ার বুকে যেমন সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে, পরকালেও পারবে সর্বোচ্চ সুখময় স্থান জান্নাতে বসবাস করতে। তাই প্রতিটি মুসলমানের আবেগ, অনুভূতি, ভালোবাসা জড়িয়ে আছে কুরআনুল কারিম ঘিরে। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা বা রাতে সব সময়ই মুসলমানরা কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করে, তিলাওয়াত করে। হাদিসে এসেছে, ‘কুরআন তিলাওয়াত সর্বোত্তম ইবাদত’ (বুখারি-৫০২৭)। কুরআন মহান রাব্বুল আলামিনের কালাম। মুমিনরা কুরআন তিলাওয়াতে, জিকিরে স্বাদ পায়, তাদের অন্তর শীতল হয়, অন্য কোনো জিনিসে তা অর্জিত হয় না। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘এরা সেই সব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর জিকিরে প্রশান্তি লাভ করে। স্মরণ রেখো, আল্লাহর জিকিরই সেই জিনিস, যা দিয়ে অন্তরে প্রশান্তি লাভ হয় (সূরা আর-রদ-২৮)।
মুমিন ব্যক্তি একদিকে কুরআন তিলাওয়াতে যেমন শান্তি খুঁজে পায় তেমনি অন্যদিকে পায় প্রতিটি অক্ষরের বিনিময়ে ১০টি করে নেকি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: সূত্রে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের কোনো একটি অক্ষরও পাঠ করবে, সে নেকি পাবে। আর নেকি হচ্ছে আমলের ১০ গুণ। আমি বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি অক্ষর; বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর ও মীম একটি অক্ষর। (তাই আলিফ, লাম ও মীম বললে ৩০টি নেকি পাবে) (মিশকাতুল মাসাবিহ-২১৩৭)।
মুমিন ব্যক্তিরা শুধু সওয়াবের নিয়তে তিলাওয়াত করে না। তাদের অন্তর আল্লাহর মহত্ত্ব ও ভালোবাসায় ভরপুর, যার দাবি হলো ভয় ও ভীতি। তারা যখন কুরআন তিলাওয়াত করে তখন আল্লাহ তায়ালার স্মরণে তাদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার হয়, অন্তর কেঁপে ওঠে। যখন তাদের কাছে আল্লাহর কুরআন পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘মুমিন তো তারাই যাদের হৃদয় আল্লাহকে স্মরণ করা হলে কম্পিত হয় এবং তাঁর আয়াতসমূহ তাদের কাছে পাঠ করা হলে তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে। আর তারা তাদের রবের ওপরই নির্ভর করে’ (সূরা আনফাল-২)।
একজন পরিপূর্ণ মুমিনের এমন গুণ-বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত, তার সামনে যখনই আল্লাহ তায়ালার আয়াত পাঠ করা হবে, তখনই তার ঈমান বৃদ্ধি পাবে, তাতে উন্নতি সাধিত হবে এবং সৎকর্মের প্রতি অনুরাগ বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য কুরআন তিলাওয়াত বা শ্রবণের সময় মনোযোগী হতে হবে।
লেখক :
শিক্ষার্থী, জামিয়া রশিদিয়া এমদাদুল উলুম, গৌরনদী, বরিশাল
Leave a Reply