ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমোন গিলমোর বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধান চায়। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হতে হবে মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ।
তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট আসলেই একটি জটিল সমস্যা। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ রেখে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একইসাথে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো ছাড়াও প্রভাবশালী দেশগুলোর সাথে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
বৃহস্পতিবার সারাদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ কার্যালয়ে সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, ইতোমধ্যে মিয়ানমারে সামরিক জান্তার ওপর কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমার সামরিক জান্তার চাপ দিয়ে আসছে।
ইমন গিলমোর জানান, দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বিপুল রোহিঙ্গার দায়ভার বাংলাদেশ বহন করে আসছে এবং বাংলাদেশের মানুষ মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে। এজন্য বাংলাদেশ ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। বিগত ছয় বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
গিলমোর আরো জানান, আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছি। রোহিঙ্গারা আমাকে বলেছেন, ক্যাম্পে খাদ্য ও শিক্ষাসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রোহিঙ্গারা। এ সঙ্কটের মধ্যেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে।
এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমোন গিলমোসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের পৌঁছার পর সরাসরি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। তার নেতৃত্বে ইইউ প্রতিনিধি দলটির গাড়ি বহর উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছায়।
গিলমোর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে ওই ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআর- পরিচালিত রোহিঙ্গাদের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম, ইউনিসেফ পরিচালিত রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম, জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত ই ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করে।
ইমোন গিলমোরসহ ইইউর প্রতিনিধিরা ইউএনএইচসিআরের কমিউনিটি সেন্টারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সাথে মানবাধিকার পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
ইইউর প্রতিনিধিদল সবশেষে, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম পরিচালিত রোহিঙ্গাদের কালচারাল সেন্টার পরিদর্শনের পর দুপুরে কক্সবাজার শহরের উদ্দেশে রওনা দেয়।
বিকেলে ইমন গিলমোরের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ে সরকারের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। রাতে অনুষ্ঠিত হবে কক্সবাজারে অবস্থানরত জাতিসঙ্ঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক।
Leave a Reply