1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

রাশিয়া কি সত্যিই ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩

রাশিয়া কি সত্যিই ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে? প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেন সেনা অভিযান শুরুর পর থেকেই এই প্রশ্ন অনেকেই করছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এখনো এই সম্ভাবনা নাকচ করছেন না।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট সোমবার (১৯ জুন) বলেন, ‘আমার ভয় পুতিন হয়তো কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবেন।’ তিনি বিশ্বাস করেন এই বিপদ এখন শুধু ‘বাস্তব’।

আমি জানি না প্রেসিডেন্ট বাইডেন ‘প্রোফাইল’ নামের রুশ ম্যাগাজিনটি পড়েন কিনা। যদি তিনি পড়েন, তাহলে বোঝা যাবে কেনো তিনি এখন এমন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন।

গত সপ্তাহে ‘প্রোফাইল’ ম্যাগাজিনে সুপরিচিত একজন রুশ পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ সের্গেই কারাগোনভের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। কারাগোনভ সরকারের উঁচু মহলের ঘনিষ্ঠ।

যে যুক্তি তিনি তার লেখায় তুলে ধরেছেন তা অনেকটা এমন-‘পশ্চিমা দেশগুলোর সংকল্প ধূলিসাৎ’ করতে রাশিয়াকে এখন শক্তভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে যে প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে তারা প্রস্তুত এবং সে কারণে পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের বর্তমান শর্তাবলী শিথিল করতে হবে।

‘শত্রুদের অবশ্যই বুঝিয়ে দিতে হবে যে তাদের অতীত এবং বর্তমানের সমস্ত আগ্রাসী তৎপরতার বদলা হিসেবে আমরা আগে-ভাগেই আঘাত করতে প্রস্তুত। এতে বিশ্বব্যাপী এবং পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি এড়ানো যাবে।

‘কিন্তু তারপরও যদি তারা বন্ধ না করে তখন কি হবে? তখন আমাদের কতগুলো দেশে বেশ কতগুলো টার্গেটে আঘাত করতে হবে যাতে যেসব লোকের বোধ-বুদ্ধি এবং যুক্তি লোপ পেয়েছে তাদের যেন হুঁশ ফেরে,’ লিখেছেন কারাগোনভ।

গত বছর থেকে আমরা মস্কোর কাছ থেকে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে অনেক কথা, অনেক হুমকি-ধামকি শুনছি।

প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে কয়েক দিন আগে নিশ্চিত করেন যে রাশিয়া বেলারুশে ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন শুরু করেছে এবং প্রথম চালান সে দেশে পৌঁছে গেছে।

পুতিন বলেন যারা ‘আমাদের কৌশলগত পরাজয়ের জন্য উন্মুখ’ তাদের হুঁশ ফেরাতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কিন্তু পশ্চিমের ওপর আগে-ভাগেই পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের কথা বলা মানে বিষয়টির গুরুত্বকে অন্য স্তরে নিয়ে যাওয়া।

তবে, সের্গেই কারাগোনভ যে কৌশলের কথা বলছেন তার সাথে রাশিয়ার সবাই একমত নন।

যেমন, রাশিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত দৈনিক কোমেরসান্ট ‘সঙ্কট সমাধানে পারমাণবিক যুদ্ধের ধারণা খুবই অমঙ্গল’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া কখন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে বা আদৌ করা উচিৎ কিনা তা নিয়ে এদেশে এখন খোলাখুলি বিতর্ক শুরু হয়েছে এবং কট্টরপন্থীদের সাথে সবাই একসাথে গলা মেলাচ্ছে না।

যেমন, বেশ কয়েকজন রুশ পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ যৌথভাবে কোমেরসান্টের ওই নিবন্ধটি লিখেছেন। সেখানে তারা যুক্তি দিয়েছেন কেনো সের্গেই কারাগোনভের চিন্তা-ভাবনা ভুল এবং বিপজ্জনক।

‘পারমাণবিক অস্ত্র যুদ্ধ প্রশমিত করবে এবং কৌশলগত সমস্যার সমাধান করবে-এমন ধারণা ব্যর্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। এ ধরনের কৌশল খুবই সন্দেহজনক এবং খুব সম্ভবত ভুল’ লিখেছেন অ্যালেক্সেই আরবাতভ, কনস্তানতিন বোগদানভ এবং মিদিত্রি স্তেফানোভিচ। এরা সবাই রুশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের অন্তর্গত গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটির সাথে যুক্ত।

‘যেকোনো সামরিক অভিযানেরই যে অজানা পরিণতি হতে পারে তার নজির আধুনিক ইতিহাসে অনেক রয়েছে। কিন্তু সে সব যুদ্ধেও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হয়নি। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে সংঘাত কোন দিকে কতদূর গড়াবে তা আঁচ করা অসম্ভব এবং সংঘাত তাতে অনেক গুণে বেড়ে যেতে পারে।’

‘পারমাণবিক রুলে (চাকার মতো ঘূর্ণায়মান বস্তু যা সাধারণত জুয়া খেলায় ব্যবহার করা হয়) খেললে যে তেজস্ক্রিয়তা তৈরি হবে তা উজ্জ্বল কোনো ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে খারাপ ভিত্তি। স্পর্শকাতর ও ভয়ঙ্কর জুয়ার ভক্ত যারা তাদের সেটা মনে রাখা উচিৎ।’

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর আরেকটি যে প্রশ্ন আমাদের তাড়া করছে তা হলো-হচ্ছেটা কী? এর পরিণতি কী?

পশ্চিমা দেশগুলার বিভিন্ন টার্গেটে পারমাণবিক হামলার যে ধারণা কারাগোনভ দিয়েছেন তা নিয়ে হয়তো অনেক রুশ শিক্ষাবিদ এবং গবেষক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এবং তারা মনে করছেন এখন তাদের চুপ করে থাকা ঠিক হবে না।

এ ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে যদিও রুশ মিডিয়ার ওপর শক্ত সরকারি নিয়ন্ত্রণ চাপানো হয়েছে। তারপরও কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর কোনো কোনো মিডিয়ায় বিতর্ক-আলোচনা এখনো সম্ভব। বিশেষ করে বিষয় যখন পারমাণবিক যুদ্ধ।

অথবা এমনও হতে পারে পশ্চিমা দেশগুলোর নজর কাড়তে সচেতনভাবে এই বিতর্ক চলতে দেয়া হচ্ছে যাতে মনে হয় কারাগোনভ যেন একজন ‘দুষ্ট পুলিশ’ আর পুতিন যেন একজন বিবেচক এবং যুক্তিবাদী নেতা।

এমন ধারণা হয়তো কাজ করছে যে পশ্চিমারা হয়তো মনে করবে পুতিন নিজে তো আগে-ভাগে তাদের টার্গেট করে পারমাণবিক হামলার কোনো কথা বলেননি, সুতরাং তার সাথে শান্তি স্থাপনই বিবেচকের মতো কাজ হবে। তা না হলে কারাগোনভের মতো কট্টরপন্থীরা হয়তো পারমাণবিক অস্ত্রের সুইচে চাপ দিয়ে দেবে।

একটি বিষয় পরিষ্কার : একদিকে পশ্চিমা বিরোধী বাগাড়ম্বর রাশিয়াতে বাড়ছে এবং সেইসাথে ইউক্রেন তাদের পাল্টা হামলা শুরু করেছে। ফলে, পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে কথাবার্তা সহসা বন্ধ হচ্ছে না।

সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com