দক্ষিণ ইউক্রেনে অবস্থিত একটি বাঁধ রাশিয়া উড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। বাঁধটি রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলেরই। কিয়েভ দাবি করেছে, এই হামলার কারণে ১৫০ টন ইঞ্জিন-তেল নিপ্রো নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে, প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি এলাকা। এদিকে দোনেৎস্ক অঞ্চলে আরেকটি বড় ধরনের ইউক্রেনীয় আক্রমণ ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার দাবি করেছে রাশিয়া। একই সঙ্গে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করারও দাবি করেছে তারা। খবর রয়টার্স ও বিবিসির।
সোভিয়েত যুগের সুবিশাল বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ার পর যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলজুড়ে পানি ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য বাঁধ ধ্বংসের জন্য উভয়পক্ষই অপরকে দোষারোপ করেছে।
রয়টার্স বলছে, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেশকিছু ভিডিওতে কাখোভকা বাঁধের চারপাশে একের পর এক তীব্র বিস্ফোরণ হতে দেখা গেছে। আবার অন্যান্য ভিডিওতে দেখা গেছে, বাঁধের অবশিষ্টাংশের মধ্য দিয়ে পানির ঢেউ বয়ে যাচ্ছে এবং পাশে থাকা ব্যক্তিরা তাদের দুঃখ প্রকাশ করছেন। তবে এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা হয়নি। ৩০ মিটার উঁচু এবং ৩.২ কিমি (২ মাইল) লম্বা এই বাঁধটি ১৯৫৬ সালে কাখোভকা জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের অংশ হিসেবে নিপ্রো নদীর ওপর নির্মিত হয়েছিল। এই বাঁধটি রাশিয়ায় সংযুক্ত ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে এবং জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রে পানি সরবরাহ করে থাকে।
এদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রুশ বাহিনী বাঁধটি উড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষিণ কমান্ড মঙ্গলবার তার ফেসবুক পেজে বলেছে, ‘কাখোভকা (বাঁধ) রাশিয়ান দখলদার বাহিনী উড়িয়ে দিয়েছে।’ অন্যদিকে রাশিয়ান বার্তা সংস্থাগুলো বলেছে, রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত বাঁধটি গোলাবর্ষণের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া রুশ নিযুক্ত একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হয়। পুতিনের নির্দেশে ওই সামরিক আগ্রাসন শুরু হয়। আক্রান্ত দেশটি এবং এর ইউরোপীয় ও পশ্চিমা মিত্ররা একে যুদ্ধ বললেও মস্কো একে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলেই অভিহিত করে আসছে।
নিকট প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোয় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সম্ভাব্য সম্প্রসারণে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে- এ চিন্তা থেকে দেশের ভবিষ্যতের জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। যদিও এই আদালতের সিদ্ধান্ত মস্কোর কাছে ‘অর্থহীন’। কারণ রাশিয়া রোম সংবিধিতে সইকারী রাষ্ট্র নয়।
Leave a Reply