মলডোভায় ইউরোপিয়ান পলিটিকাল কমিউনিটির সম্মেলন বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। আলোচনার বিষয় ইউক্রেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান তো বটেই তার বাইরেও ইউরোপীয় দেশগুলো এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। মোট ৪৭টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান পৌঁছেছেন ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে মলডোভার বিলাসবহুল মিমি ওয়াইনারি প্রাসাদে।
সম্মেলনের প্রথম দিনেই উঠে এসেছে ইউক্রেনের প্রসঙ্গ। বুধবার রাতেও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রবল আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। একের পর এক দূরপাল্লার মিসাইল, ড্রোন এবং বিমান হামলা চালানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও ট্রেনে করে মলডোভার সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এদিনের বক্তৃতায় তিনি ফের অস্ত্র সাহায্যের কথা বলেছেন।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া যেদিন চাইবে, সেদিনই যুদ্ধ থেমে যাবে। কিন্তু রাশিয়া তেমন কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বরং রাজধানী-সহ সর্বত্র একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে ইউক্রেনের আরো অস্ত্র প্রয়োজন। ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলোর কাছে তিনি আরো বেশি অস্ত্রের দাবি করেছেন।
একইসাথে এদিন জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তার দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোয় যোগ দেয়ার জন্য প্রস্তুত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগেই ইউক্রেনকে সদস্যপদ দেয়ার আলোচনা শুরু করেছিল। কিন্তু ন্যাটোয় শেষপর্যন্ত ইউক্রেন জায়গা করে নিতে পারবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এদিনের আলোচনায় মলডোভাকেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মলডোভা এবিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
রাশিয়া ও বেলারুশ ছাড়া ইউরোপের প্রায় সব দেশই এদিনের বৈঠকে যোগ দিয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল বলেছেন, ‘রাশিয়া এখানে নেই কারণ, রাশিয়া নিজেই নিজের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা যুদ্ধ শুরু করেছে।’ বস্তুত, রাশিয়ার বিরুদ্ধে গোটা ইউরোপকে সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে এই সম্মেলন তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেলারুশ রাশিয়ার বন্ধু, তাই তাদেরকেও এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্টও ভ্লাদিমির পুতিনের পরম বন্ধু। কিন্তু তাকে এই সম্মেলনে যোগ দিতে দেখা গেছে। যদিও রেড কার্পেটে তার পাশে আর কেউ ছিলেন না।
প্রথম দিনের আলোচনা থেকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এই সম্মেলনে যে কোনো সিদ্ধান্ত হবে না, তা আগেই জানিয়েছিলেন জার্মানি এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধান। তাদের বক্তব্য, এই সম্মেলনে সকলের অভিমত শোনা হবে। সকলের সঙ্গে আলোচনার পরিসর তৈরি করা হবে। এখানে যা আলোচনা হবে, পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তা সিদ্ধান্ত হিসেবে গ্রহণ করা হবে। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ইউরোপের বেশির ভাগ দেশকে একটি ছাতার তলায় আনা। এদিনের বৈঠকে ফের ইউরোপীয় ইউনিয়নে আরো দেশকে ঢোকানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
Leave a Reply