সুদানের রাজধানী খার্তুম ও জমজ শহর বাহরিতে নতুন করে বিমানহামলা হয়েছে। এদিকে, সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ পঞ্চম সপ্তাহে গড়িয়েছে। এর ফলে, আটকে পড়া ও বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের মানবিক সঙ্কট গভীরতর হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সামরিক বাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স বা আরএসএফ-এর মধ্যে ভয়ানক লড়াইয়ে বিপর্যস্ত খার্তুমবাসীর জীবনকে সশস্ত্র লোকজন ও তাদের সমর্থক বেসামরিক লোকদের ব্যাপক লুটপাট আরো দুর্বিষহ করে তুলেছে।
এই সংঘাত সুদানের মধ্যে আনুমানিক ৮ লাখ ৪৩ হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। জাতিসঙ্ঘের শরণার্থী সংস্থা শুক্রবার এ কথা বলেছে।
সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান শুক্রবার ক্ষমতাসীন সার্বভৌম কাউন্সিলে তার ডেপুটি পদ থেকে আরএসএফ প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালোকে, অপসারণের দীর্ঘ প্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেন। দাগালোকে হেমেদতি নামে বেশি পরিচিত।
২০১৯ সাল থেকে তারা এই কাউন্সিল পরিচালনা করেছিলেন। তখন ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বাশিরের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হলে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন এই দুই জেনারেল। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের আগে, একটি অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়সীমা ঘনিয়ে আসছিল।
সৌদি শহর জেদ্দায়, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি।
শুক্রবার সেখানে আরব লীগের বৈঠকে, সুদানের রাষ্ট্রদূত একটি বিবৃতিতে আরএসএফের বিরুদ্ধে লুটপাট, ধর্ষণ এবং বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন।
আরএসএফ, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘর্ষ শুরু করার এবং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। তারা বলেছে, যারা অপরাধ করছে তারা আরএসএফ-এর চুরি করা উর্দি পরছে।
কয়েক দশক ধরে সংঘাত-আক্রান্ত স্বৈরশাসনাধীন সুদানকে গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থিত চুক্তির অধীনে আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীতে একীভূত করার পরিকল্পনা নিয়ে বিরোধের পর ১৫ এপ্রিল সুদানে লড়াই শুরু হয়।
দ্বিতীয় আদেশ অনুযায়ী বুরহান বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা মালিক আগারকে তার নতুন ডেপুটি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। সরকারের সাথে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর মালিক ২০২০ সালে সুদান কাউন্সিলে যোগ দেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই সংঘাতে প্রায় ৭০৫ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৫ হাজার ২৮৭ জন আহত হয়েছে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
Leave a Reply