উত্তর কোরিয়া রোববার জানিয়েছে, তাদের সর্বশেষ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘প্রাণঘাতী’ পারমাণবিক আক্রমণ-সক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার আসন্ন সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে বাড়তি ও শক্তিশালী হুমকি দেয়া।
এর প্রতিক্রিয়ায়, রোববার পৃথকভাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের যুদ্ধবিমানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র যৌথ মহড়ায় অংশ নেয় এবং দূর-পাল্লার সুপারসনিক বোমারু বিমান উড়িয়ে শক্তি প্রদর্শন করে।
শনিবারের আইসিবিএম পরীক্ষাটি ১ জানুয়ারির পর উত্তর কোরিয়ার প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। এটি ইঙ্গিত দিয়েছে যে দেশটির নেতা কিম জং উন প্রতিদ্বন্দ্বীদের মহড়ার অজুহাতে, নিজ দেশের পারমাণবিক অস্ত্রসম্ভারের সম্প্রসারণ করে, ভবিষ্যৎ দর কষাকষিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এগিয়ে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এক বিশেষজ্ঞ জানান, উত্তর কোরিয়া আইসিবিএম সহযোগে নিয়মিত মহড়া আয়োজনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানায়, ‘হঠাৎ’, কোনো পূর্ব-ঘোষণা ছাড়াই, কিমের সরাসরি নির্দেশে হোয়াসং-১৫ আইসিবিএম উৎক্ষেপণের আয়োজন করা হয়।
দৃশ্যত, প্রতিবেশী দেশগুলোকে এড়াতে ক্ষেপণাস্ত্রটি অনেক উঁচুতে নিক্ষেপ করা হয়। উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ নিয়ে যেসব তথ্য প্রকাশ করেছে, তা এর আগে করা প্রতিবেশী দেশগুলোর বিশ্লেষণের কাছাকাছি।
এসব বিশ্লেষণে জানা গেছে, স্বাভাবিক গতিপথে নিক্ষেপ করা হলে, ক্ষেপণাস্ত্রটি তাত্ত্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।
রোববারের শেষ বেলায়, যুক্তরাষ্ট্রের বি-১বি বোমারু বিমান ও অন্যান্য বিমান পৃথকভাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের যুদ্ধবিমানের সাথে কোরীয় উপদ্বীপের ওপর দিয়ে ও এর কাছাকাছি এলাকায় যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়ায় অংশ নেয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর এক বক্তব্যে জানানো হয়, রোববারের প্রশিক্ষণ মহড়া আবারও দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইস্পাত-কঠিন’ অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান উভয় দেশই যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। তবে, তারা প্রায়ই বিভিন্ন বিষয়ে বিবাদে জড়ায়, যার মধ্যে আছে ১৯১০ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত কোরীয় উপদ্বীপে টোকিওর ঔপনিবেশিক দখলদারিত্ব। তবে, উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগুলো, এই দুই দেশকে, নিজেদের পারস্পরিক নিরাপত্তা সহযোগিতাকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে কাজ করতে বাধ্য করেছে।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা
Leave a Reply