বিতর্কের মাঝেও বাজারে থাকা ঋণ পরিশোধের ঘোষণা করতেই হু হু করে বাড়ছিল আদানিদের শেয়ারের দাম। কিন্তু দু’দিন যেতে না যেতেই আবার পড়তে শুরু করেছে ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গ্রুপের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দর।
গত সোমবার বাজারের থাকা কোটি কোটি টাকার ঋণ শোধ করার দাবি করেছিল আদানি গ্রুপ। তার ঠিক এক দিন পরই অর্থাৎ, গত মঙ্গলবার আদানিদের মূল সংস্থা আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের দর বেড়েছিল প্রায় ২৫ শতাংশ। বুধবার সেই দাম ছিল আকাশছোঁয়া।
মনে করা হচ্ছিল, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের জেরে শেয়ার বাজারে যে ক্ষতি আদানিদের হয়েছে তা ধীরে ধীরে আবার পূরণ হতে শুরু হয়েছে।
কিন্তু বৃহস্পতিবারের হিসাব বলছে অন্য কথা। বৃহস্পতিবার আবার শেয়ার বাজারে মুখ থুবড়ে পড়েছে আদানি এন্টারপ্রাইজ। শেয়ারের দর কমেছে ১১ শতাংশেরও বেশি।
তবে এদিন শুধু আদানিদের নয়, অন্যান্য বহু সংস্থার শেয়ারের দরে পতন হয়েছে। আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভের হার-বৃদ্ধির গতি এর অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মেয়ার বাজারে নিফটি ৫০ সূচক ০.১২ শতাংশ বেড়ে ১৭ হাজার ৮৯৩ দশমিক ৪৫ এ বাজার শেষ হয়েছে। অন্য দিকে, এস অ্যান্ড পি বিএসই সেনসেক্স ০.২৩ শতাংশ বেড়ে ৬০ হাজার ৮০৬ দশমিক ২২ হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার শেয়ার বাজারের ১৩টি প্রধান সূচকের আটটি লোকসান করেছে। যার মধ্যে অন্যতম ধাতব সূচক প্রায় এক দশমিক ৫৮ শতাংশ নিচে নেমেছে। আদানি এন্টারপ্রাইজেরও অন্যতম মূল ভিত্তি ধাতব সূচক। তাই স্বাভাবিকভাবেই তা বৃহস্পতিবার সংস্থার বাজারদর নিচের দিকে গিয়ে ঠেকেছে।
এ দিন আদানি গোষ্ঠীর নরওয়ের ১ কোটি ৩৫ লাখ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করেছে। এর মাধ্যমে তাদের কাছে থাকা আদানিদের অবশিষ্ট শেয়ারগুলো তারা বিক্রি করে দিয়েছে বলেই জানিয়েছে।
এই তহবিলের অন্যতম শেয়ার হোল্ডার ক্রিস্টোফার রাইট বলেন, ‘আমরা বহু বছর ধরে আদানিদের উপর নজরদারি চালাচ্ছি। তাদের বেশ কিছু কাজ পরিবেশগত ঝুঁকি তৈরি করছে।’
জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত নরওয়ের এই সংস্থা আদানি গোষ্ঠীর পাঁচটি সংস্থা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। আদানি পোর্টসহ তিনটি সংস্থায় বিনিয়োগ করেছিল নরওয়ের এই তহবিল। তবে তারা সবকিছু থেকে নিজেদের প্রত্যাহার কেরে নিয়েছে।
ক্রিস্টোফার বলেন, ‘গত বছরের শেষ থেকে আমরা আদানি সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ আরো কমিয়েছি। আমাদের সাথে আদানিদের আর বিশেষ সম্পর্ক নেই।’
২০২২ সালের শেষের দিকে নরওয়ের ওই তহবিলের আদানি গ্রিন এনার্জিতে ৫২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার মূল্যের শেয়ার, আদানি টোটাল গ্যাসের ৮৩.৬ মিলিয়ন ডলারের শেয়ার এবং আদানি পোর্টস এবং স্পেশাল ইকোনমিক জোনে ৬৩.৪ মিলিয়ন ডলারের শেয়ার ছিল। সব মিলিয়ে আদানিদের প্রায় এক হাজারর ৬৪৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে দিলো নরওয়ের সংস্থা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলোর শেয়ার দরে পতন দেখা গিয়েছে।
Leave a Reply