ভারত ও চীনের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি করিডর বা চিকেন নেককে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো উন্নত করছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান পূর্ব ও উত্তর পূর্ব ভারতের জিওসি এনসি তথা সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাণাপ্রতাপ কলিতা। এদিন এই অনুষ্ঠানে সেনাকর্তাকে সম্বর্ধনা দেন কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর ও সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ও প্রশ্নোত্তরের সময় পূর্বাঞ্চলের সেনা কমান্ডার জানান, যেহেতু উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে চীন ও ভারত সীমান্তবর্তী অনেক অংশেই সীমানা ভালোভাবে চিহ্নিত করা নেই, তাই চীনের সেনাবাহিনী পিএলএ আগ্রাসন করলে মাঝে মাঝে সংঘর্ষ হয়। চীনের সীমান্তে বর্তমান পরিস্থিতি স্থিতিশীল তবে অপ্রত্যাশিত। সেনাবাহিনী শিলিগুড়ি করিডর সম্পর্কে সচেতন। কারণ, এটিই ইসলামপুর থেকে শুরু করে সমগ্র উত্তর পূর্ব ভারতের মধ্যে সংযোগের জন্য মূল সড়কপথ। এর সংকীর্ণ অংশ ২০ থেকে ২২ কিলোমিটার। ফলে চিকেন নেক রক্ষার্থে যেকোনো মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও উন্নত হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীনে পিএলএ সীমান্তবর্তী মডেল গ্রামের উন্নয়ন করেছে। তাই চীনের মোকাবিলা করতে ভারতীয় সেনাবাহিনী লাদাখ থেকে শুরু করে অরুণাচল পর্যন্ত সীমান্তে গ্রাম তৈরি করছে। এর মধ্যে অরুণাচলেই ১৩০টি জায়গা গ্রাম তৈরির জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটিতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। এর ফলে সীমান্ত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে। বাহিনীর সীমান্ত পাহারা দেয়ারও সুবিধা হবে। এ ছাড়াও সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো সুবিধাগুলো দেয়া হচ্ছে। চীনকে মোকাবেলার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরিকাঠামোগত উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছে। সীমান্তে যতটা ভালো সম্ভব রাস্তা ও সুড়ঙ্গ নির্মাণের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিমের সীমান্ত এলাকায় চীনা প্রভাবের মোকাবেলা করতে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা তিব্বতি ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। দু’মাসের কোর্সে তিব্বতের সংস্কৃতি, ইতিহাস, রাজনীতি, ভূগোল সম্পর্কে পড়াশোনা করে সীমান্তবর্তী গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের সাথে বন্ধুর মতো মিশছেন। পরিদর্শন করছেন তিব্বতী মঠগুলোও। আবার অনেকে তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় চীনা ভাষাও শিখছেন বলে জানিয়েছেন ওই সেনা কমান্ডার।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
Leave a Reply