পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে নয়াদিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ওই দেশের প্রধান বিচারপতি ওমর আট্টা বান্দিয়ালকেও। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতে আসন্ন সাহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) গ্রুপভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠক উপলক্ষ এই আমন্ত্রণ। তবে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে তারা নয়াদিল্লি আসবেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই আমন্ত্রণ জানান। পাকিস্তান আমন্ত্রণ গ্রহণ করলে তা হবে প্রায় ১২ বছরের মধ্যে এ ধরনের প্রথম সফর। ২০১১ সালের জুলাই মাসে শেষবারের মতো পাকিস্তানের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী (হিনা রাব্বানি) ভারত সফর করেছিলেন।
জি২০-র পাশাপাশি ভারত চলতি বছরের (এসসিও) গ্রুপেরও সভাপতিত্ব করছে। রাশিয়া, চীন, ইরান, ভারত, পাকিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে তৈরি এই গ্রুপের প্রধান বিচারপতি পর্যায়ের বৈঠক মার্চ মাসে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক মে মাসে। চীন এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব রয়েছে বলে এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনটির সম্মেলনের বাইরে ইসলামাবাদ থাকতে চাইবে না বলেই কূটনৈতিক মহলের অনুমান।
পররাষ্ট্রন্ত্রীদের বৈঠকটি হবে গোয়ায়। যদি আমন্ত্রিত দু’জনই আসেন তা হলে তা দক্ষিণ এশিয়ার রণনীতিতে একটি মাইলফলক ঘটনা হতে চলেছে। দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পারস্পরিক সফর অনেক দিন ধরেই হচ্ছে না। অনেকের মতে, ভারতের অনমনীয়তার কারণেই এমনটা হচ্ছে। ভারত এমনকি পাকিস্তানে ক্রিকেট দল পাঠাতে নারাজ। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সংলাপের আহ্বান জানালেও ভারত তা রূঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
এই প্রেক্ষাপটে এদের না পাঠিয়ে হয়তো অপেক্ষাকৃত নিম্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠাতে পারে পাকিস্তান সরকার। সম্প্রতি জাতিসঙ্ঘে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে নিহত আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের তুলনা টেনে কূটনৈতিক সংঘাতকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো।
ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, বিলাওয়াল ভুট্টো এলে তা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বড় কোনো পরিবর্তন আনবে, বিষয়টি এমন নয়। কিন্তু নিঃসন্দেহে তা বরফ গলানোর প্রাথমিক কাজটা করবে। জুন মাসে এসসিও শীর্ষ সম্মেলন এবং সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ডাকা হবে বলেই খবর। এই সফরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে এক ধরনের সংযোগ ফের তৈরি করতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার পরই অক্টোবর ও নভেম্বরে ভারতে রয়েছে এক দিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এসসিও-র বৈঠক সফল হলে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের ভারত সফরের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আনন্দবাজার পত্রিকা ও অন্যান্য
Leave a Reply