নিছক প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হলেও ম্যাচটিকে ঘিরে উত্তেজনার কমতি ছিলো না কোনো অংশেই। ম্যাচেও ছিল তার প্রভাব, মুহূর্তে মুহূর্তেই বদলেছে খেলার আবহ। গোলে ভরা যেই ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে পিএসজিই, রোনালদোর রিয়াদ অল স্টার একাদশকে ৫-৪ গোলে হারিয়েছেন মেসি, নেইমার, এম্বাপ্পেরা।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় শুরু হওয়া প্রদর্শনী ম্যাচটি ঘিরেও উত্তাপ ছিল অন্য যেকোনো সময়ের চেয়েও বেশি। মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ, সৌদিতে নিজের খেলোয়াড়ি জীবনে নতুন অধ্যায় অথবা সম্ভাব্য সর্বশেষ বারের মতো মেসি রোনালদোর মুখোমুখি হওয়া; এসব কারণে এই ম্যাচ প্রতিযোগিতামূলক না হলেও এই ম্যাচ নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ এবং আলোচনা সবকিছুতেই ছিল ভিন্ন মাত্রা। মাঠের বাইরের উত্তাপ দেখা গিয়েছে মাঠের ভেতরেও। ৯ গোলের এই লড়াইয়ে পিএসজি জিতেছে ৫-৪ গোলে। গোল করেছেন মেসি, রামোস, এম্বাপ্পে, রোনালদো সবাই।
গোলবন্যার শুরুটা করেন লিওনেল মেসি। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে নেইমারের বানিয়ে দেয়া বল জালে জড়িয়ে এগিয়ে দেন পিএসজিকে। মেসি গোল করার দুই মিনিট পরই গোল পেতে পারতেন রোনালদো, তবে তার নেয়া সেই শট ঠেকিয়ে দেন পিএসজি গোলরক্ষক, রোনালদোর সাবেক সতীর্থ কেইলর নাভাস।
এদিকে ম্যাচের ৩২তম মিনিটে রোনালদোকে ফাউল করে বসেন নাভাস, ফলে পেনাল্টি পায় রিয়াদ তারকা একাদশ। পেনাল্টি কিক সফলভাবে জালে জড়িয়ে রিয়াদ একাদশকে সমতায় ফেরান ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, একইসাথে সৌদি আরবে খুলেন নিজের গোলের খাতা। এই গোলের কিছুক্ষণ পরই বাজেভাবে একটি ফাউল করে বসেন পিএসজির রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হুয়ান বার্নাট, ফলে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ফলে পিএসজি পরিণত হয়ে যায় ১০ জনের দলে।
১০ জনের দল হওয়ার পরও আক্রমণের ধার কমেনি পিএসজির, ৪৩তম মিনিটে কর্নার পায় তারা। আর সেখান থেকেই এম্বাপ্পের ক্রস জালে জড়িয়ে দলকে আবারো এগিয়ে দেন পিএসজি অধিনায়ক মার্কুইনহোস। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি পায় পিএসজি। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন নেইমার, তার নেয়া পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন রিয়াদ তারকা একাদশের সৌদি গোলরক্ষক আল ওয়াইস।
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে আবারো গোল করে রিয়াদ তারকা একাদশ। এবার গোলদাতা রোনালদো, সাউদ আব্দুল হামিদের বাড়িয়ে দেয়া বলে মাথা লাগিয়ে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ফলে দুই-দুই গোলের সমতায় থেকে প্রথমার্ধের বিরতিতে যায় দুই দল।
প্রথমার্ধের মিনিট ১০ পর আবারো এগিয়ে যায় পিএসজি। এবার কিলিয়ান এম্বাপ্পের এসিস্টে গোল করেন সার্জিও রামোস। তবে এর তিন মিনিট পরই আবারো সমতায় ফিরে রিয়াদ তারকা একাদশ। তারকা একাদশের হয়ে হুয়ুন সু জাং এর করা সমতাসূচক গোলের এসিস্ট আসে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড গঞ্জালো মার্টিনেজের পা থেকে।
এদিকে ম্যাচের ৬০তম মিনিটে ফের পেনাল্টি পায় পিএসজি। প্রথম পেনাল্টি নেইমার কাজে না লাগাতে পারলেও এমবাপ্পে ভুল করেননি। গোল করে পিএসজিকে আবারো এগিয়ে দেন তিনি। ম্যাচের ৬১তম মিনিটে দুই দলই বেশ কিছু পরিবর্তন আনে। ফলে মাঠ ছেড়ে উঠে যান মেসি, রোনালদো, এম্বাপ্পে, রামোসরা। তারকা ফুটবলাররা মাঠ ছেড়ে যাওয়ার পর ম্যাচের উত্তাপ সামান্য কমে আসে।
তবে ৭৮তম মিনিটে যখন পিএসজির হয়ে হুগো একেটিকে পঞ্চম গোলটি করেন তখন অনেকে ধরেই নিয়েছিল সহজেই পিএসজি জিতে যাচ্ছে। কিন্তু এরপর থেকেই ধারালো হয় তারকা একাদশের আক্রমণ। এতো বেশি আক্রমণের ফলও তারা পায় গোলের মাধ্যমেই। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে তারকা একাদশের চতুর্থ গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার এন্ডারসন তালিস্কা, তখন মনে হয়েছিল ম্যাচে ফিরতে পারে তারা। তবে তা আর হয়ে উঠেনি, তালিস্কার সেই গোল শুধুমাত্র ম্যাচের ব্যবধানই কমিয়েছে।
Leave a Reply