1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৩

নতুন বছরের শুরুতেই অর্থনীতির তিন সূচকেই সুখবর মিলেছে। নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণে। মূল্যস্ফীতির হার সামান্য কমেছে। বেড়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সোমবার প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আর রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে রেমিট্যান্সের হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়। সূত্র জানায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট এবং আন্তর্জাতিক বাজারে মন্দার মধ্যেও দেশের রপ্তানি আয় বেড়েছে। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৭১৯ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৩১ কোটি ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি হয়েছে। পাশাপাশি গত অর্থবছরের একই সময় আয় হয়েছিল ২ হাজার ৪৬৯ কোটি ডলার। সে তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ। গত নভেম্বরে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫০৯ কোটি ডলার। গত ডিসেম্বরে আয় হয়েছে ৫৩৬ কোটি ডলার। নভেম্বরের চেয়ে ডিসেম্বরে বেশি হয়েছে আয়।

ইপিবির প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, একক মাস হিসাবে বিদায়ি বছরের ডিসেম্বরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। ডিসেম্বরে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৪২ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৫৩৬ কোটি ডলার। আয় কম হয়েছে ১ দশমিক ০৩ শতাংশ। তবে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে আয় হয়েছে ৪৯০ কোটি ডলার। সে ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

গত শনিবার পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে (বিবিসিএফইসি) ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, চলতি অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সময় ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় ছিল না। তা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাই আশা করছি অর্থবছর শেষে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।

ইপিবি’র তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ হাজার ১৯৪ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ২ হাজার ২৯৯ কোটি ডলার। আয় বেশি হয়েছে ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ ছাড়া গত অর্থবছরের একই সময় আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ডলার। সে ক্ষেত্রে একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। একইভাবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৭ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৬৩ কোটি ডলার। সে ক্ষেত্রে আয় কম হয়েছে ৫.৬ শতাংশ। এ ছাড়া গত অর্থবছরের একই সময় আয় হয়েছে ৫৬ কোটি ডলার। সে ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১৩ শতাংশ।

এদিকে বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, বাজারে পণ্যমূল্য না কমলেও দেশের মূল্যস্ফীতিতে বিরাজ করছে নিম্নমুখী ধারা। গত ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। নভেম্বর মাসে এ হার ছিল ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তবে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে এই হার ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এ হিসেবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি অনেক বাড়তি রয়েছে। এ ছাড়া গত মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা নভেম্বর মাসে ছিল ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশে, যা নভেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অপর দিকে গড় মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এক বছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, মূল্যস্ফীতি কমা মানে পণ্যের দাম কমাটা বোঝায় না। মূল্যস্ফীতি কিছু কম মানে হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হার কমেছে। কিন্তু যেটি হয়েছে সেটিও তো অনেক বেশি। বাজারে আমন ধান এবং শীতের সবজি আসায় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার নিম্নমুখী হলেও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের ক্ষেত্রে তেমন পরিবর্তন লক্ষ করা যায় না।

বিবিএস বলেছে, গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এ সময় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ, নভেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ, নভেম্বর মাসে যেটি ছিল ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ।

এদিকে ডিসেম্বর মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশে, যেটি নভেম্বর মাসে ছিল ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। এ সময় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ, যেটি নভেম্বরে ছিল ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

বিবিএস’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসে মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ, যা নভেম্বর মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে কৃষিতে বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যেটি নভেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া শিল্পে মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ১২ শতাংশ, যেটি নভেম্বর মাসে ছিল ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ। সেবা খাতেও মজুরি হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ২৬ শতাংশ, যা নভেম্বর মাসে ছিল ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ সামান্য বেড়েছে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। গত নভেম্বরে এসেছিল ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার। এ ছাড়া ২০২১ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে প্রায় ৭ কোটি ডলার বেশি এসেছে ডিসেম্বরে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৩ কোটি ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৪৯ কোটি ৩২ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ২৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে এ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বেশি এসেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com