এখন চলছে সব রকম মৌসুমী ফলের ভরা মৌসুম। যত্রতত্র মিলছে আম, জাম, কাঁঠালসহ অন্যান্য সব ধরনের মিষ্টি ফল। এর মধ্যে জনপ্রিয় ও সুস্বাদু একটি ফল হচ্ছে জাম। গ্রীষ্মকালীন সময়ে জাম খান না এমন বাঙালি কমই আছে। এটি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও অনেক সুস্বাদু। জাম স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী ও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ। এই ফলের পুষ্টিগুণ অনেক দামি ফলকেও হার মানায়। পৃথিবীর নানান দেশে বিভিন্ন নামে এই ফল পরিচিত। এই ফলটি দেখতে বেশ ছোট। চলুন জেনে নিন জামের অসাধারণ কিছু পুষ্টিগুণ সর্ম্পকে-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
জামে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যেমন- ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন সি রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অতুলনীয়ভাবে কাজ করে। এ ছাড়াও জাম শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
জাম খুবই জনপ্রিয় ডায়াবেটিস চিকিত্সা আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে। রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমায় এই ফল। এর বীজ, ছাল, ফল এবং পাতা সবই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারি। এটি ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো যেমন ঘন ঘন প্রস্রাব এবং ক্ষুধা দুর করে। জামে উপস্থিত ফ্ল্যাভনয়েড ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এর বীজও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দারুণ কার্যকরী।
হাড় মজবুত করে ও দাঁত ভালো রাখে
জাম হল ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। এই ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, লোহা হাড়ের গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই জাম খাওয়ার ফলে আমাদের হাড় মজবুত করে, দাঁত ভালো রাখে। তা ছাড়া যারা ঘাড়ের ক্ষয়ক্ষতিজনিত রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য জাম বিশেষ উপকারী।
হার্ট সুস্থ রাখে
জাম ভালো কাজ করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে। এ ফলটিতে আছে পটাসিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে।
সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
জাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি ফল যা সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ত্বককে মুক্ত রাখে রোগ থেকে। এই ফল ত্বকের ব্রণ, কালো দাগ, বয়সের ছাপ এবং ক্ষত প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এই ফলে আয়রন বেশি পরিমাণে থাকায় এটি রক্তকে পরিস্কার রাখে এবং ফলটির ভিটামিন সি ত্বক এর সৌন্দর্য বাড়ায়।
ঠান্ডা সারায়
কাশি এবং হাঁপানি রোগ সারাতে তাজা জামের রস অনেক কার্যকরী। এটি ঠান্ডা সমস্যার জন্য অনেক কার্যকরী এবং বিরোধী পক্বতা এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
জামে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিয়াটরি ফাইবার থাকায় এটি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও এটি কোষ্টকাঠিন্য কমায়।
হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়তা করে
শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে জামে থাকা ভিটামিন সি এবং আয়রন। জাম রক্ত পরিশোধক এজেন্ট হিসেবেও কাজ করে যা ত্বক এবং সৌন্দর্যের জন্য বেশ ভালো। নারীদের ঋতুস্রাবকালে এবং যারা অ্যানিমিয়া ও জন্ডিসে আক্রান্ত তাদের এই ফল বেশি করে গ্রহণ করা উচিত।
Leave a Reply