1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন

অশনির শঙ্কা : বিপুল ক্ষতিতে সাতক্ষীরার আমচাষিরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ মে, ২০২২

আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ১২ মে নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা ও সাতক্ষীরার উপকূল অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অশনি। গত বছরের আম্ফানের ক্ষয়ক্ষতির তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শঙ্কায় সাতক্ষীরার আমচাষিরা এবার মৌসুমের শুরুতেই আম পেড়ে ফেলছেন। ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কায় আতঙ্কিত তারা। ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পাড়া শুরু হয়েছে। অপরিপক্ব আম পাড়ায় বিপুল ক্ষতিতে পড়তে যাচ্ছেন আম চাষিরা।

সাতক্ষীরার আমচাষিরা জানান, গত বছর আম পাড়ার ভরা মৌসুমে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে গাছের সব আম ঝরে যায়। এতে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন তারা। এ বছর মহাজনের কাছ থেকে অগ্রিম দাদন নিয়ে অনেকে আমবাগান কিনেছেন। কিন্তু সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার ফলন কম। তার ওপর ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পাড়তে শুরু করেছেন সাতক্ষীরার অনেক আমচাষি।

জানা যায়, সাতক্ষীরায় কেমিক্যালবিহীন আম বাজারজাত করার লক্ষ্যে সরকারি নির্দেশনায় আম পারার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন। এ নির্দেশনা অনুযায়ী ৫ মে থেকে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, ক্ষীরসাপাতি, গোলাপখাস ও বৈশাখীসহ বিভিন্ন দেশীয় জাতের আম, ১৬ মে থেকে হিমসাগর, ২৪ মে থেকে ল্যাংড়া ও ১ জুন থেকে আম্রোপালি আম পেড়ে বাজারে তোলার কথা। সে অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) থেকে জেলার বাজারে গোবিন্দভোগ জাতের আম বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেকে অপুষ্ট হিমসাগর আম বাজারে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় অশনি আঘাত হানার আশঙ্কা থাকায় এবার সরকারি নির্দেশনা কিছুটা শিথিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ। একই সাথে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কায় লোকসান ঠেকাতে গত শনিবার থেকে আমচাষিরা প্রায় সব ধরনের আম পাড়া শুরু করেছেন। জেলা শহরের অদূরে ধুলিহর, ফিংড়ি, ব্রহ্মরাজপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে চাষিরা গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, ক্ষীরসাপাতি, গোলাপখাস ও বৈশাখীসহ অন্যান্য জাতের আমের সাথে হিমসাগর আমও পেড়ে ফেলছেন।

ধুলিহর এলাকার আমচাষি মোকলেছুর রহমান জানান, গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে তার সব বাগানের আম ঝরে যায়। এতে ২০ লক্ষাধিক টাকার মতো ক্ষতি হয় তার। এবার আম পাড়া মৌসুমের শুরুতেই শুনছেন ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস। তিনি বলেন, প্রশাসনের বিধিনিষেধ থাকায় হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম পাড়া যাচ্ছে না। তবে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসের সময় প্রশাসনের উচিত বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা।

সাতক্ষীরা জেলা আমচাষি সমিতির সভাপতি লিয়াকাত হোসেন বলেন, করোনা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গত কয়েক বছর ধরে আমচাষিরা বড় লোকসানে আছেন। চলতি মৌসুমেও ফলন কিছুটা কম। তার ওপর আগামী সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস। তাই অনেকেই গাছ থেকে আগাম আম পাড়তে শুরু করেছেন। এসব আম বাজারে কাঁচা হিসেবেই বিক্রি করা হবে বলেও জানান তিনি।

সুলতানপুর বড় বাজার কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু বলেন, সরকারি নির্দেশনায় গত বৃহস্পতিবার থেকেই গোবিন্দভোগ আম পাড়া শুরু হয়েছে। বড় বাজারের প্রতিটি আমের আড়তে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগসহ আগাম জাতের আম বিক্রিও শুরু হয়েছে। প্রথম দিন প্রতি মণ কাঁচা আম বিক্রি হয়েছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকায়। অন্য জাতের আম পাড়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকে গোপনে হিমসাগর আম পেড়ে বিক্রি করছেন। ওই আম ১৬ তারিখের আগে বড় বাজারে বিক্রি হবে না।

সাতক্ষীরার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, এবার সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আমের ফলন কিছুটা কম হয়েছে। যেসব গাছে আম হয়েছে সেগুলোও আকারে ছোট। আগামী সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় চাষিদের আগাম জাতের আম পাড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে অপুষ্ট হিমসাগর আমও পাড়ছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিদেশে আম রফতানির বিষয়ে তিনি বলেন, আম রফতানির জন্য এবারো আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে শুধুমাত্র নির্ধারিত বাগানের আম বিদেশে রফতানি হবে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, চলতি বছর জেলায় প্রায় সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। জেলায় সরকারি তালিকাভুক্ত পাঁচ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার আমচাষি রয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com