হাওরে একের পর এক বাঁধ ধসের ঘটনা ঘটছে। কোথাও কোথাও বাঁধ উপচে পানি ঢুকছে হাওরে। গত কয়েকদিনে বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বেড়ে গাঙের বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওর। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ারের পাশে গাঙের বাঁধ উপচে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করতে দেখা গেছে। নোয়াল, জয়পুরের হাওরসহ ১০টি হাওরের হাজার হাজার কৃষকের ভরসা এই বাঁধটি। পানি ঢুকে পড়ায় হাওরের ছয় হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের না হলেও ২৩নং পিআইসির মাধ্যমে কাজ করানো হয় ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে। বাঁধটি কিছুদিন আগে ধসে গিয়েছিল, পরে সেটি মেরামত করা হয়। এর আগে গত ২ এপ্রিল সকালে টাঙ্গুয়ার হাওরে নজরখালী বাঁধ ভেঙে পাঁচ হাজার হেক্টর বোরো ফসল ডুবে যায়। বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করলেও পিআইসির সভাপতি আনোয়ারের দেখা পাওয়া যায়নি।
হাওরপাড়ের কৃষকরা বলছেন, দুর্বল বাঁধ ও ক্লোজারে (খালে) যথাযথ নিয়মে মেনে কাজ হয়নি। বেশির ভাগ ক্লোজারেই বাঁশ, চাটাই ব্যবহার করা হয়নি। বাঁধের নিচে এ কারণে সৃষ্ট এক ধরনের গর্ত (স্থানীয় ভাষায় ফুলপা) রয়েছে প্রচুর। ওই সব গর্ত ভরাটে কাজ হয়নি।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা বলছেন, সুনামগঞ্জ হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ বহুগুণ বেড়েছে। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ নকশায় বাঁধ নির্মাণ ও তদারকিতে ঘাটতি থাকায় টেকসই হয়নি।
চিলানী তাহিরপুর গ্রামের কৃষক সাহাজ উদ্দিন বলেন, ‘ওই হাওরে আমি ৪০ কিয়ার (জমি পরিমাপের স্থানীয় একক) জমিতে বোরো আবাদ করেছি ধারদেনা করে। এ জমিই আমার আয়ের মূল উৎস। হাওরে পানি প্রবেশ করায় এখন পথে বসতে হবে।‘
হাওরটিতে ১৩ কিয়ার জমিতে বোরো লাগিয়েছেন জয়পুর গ্রামের কৃষক আল আমিন। তিনি বলেন, ‘পানি ঢুকে আমার কষ্টের ফলানো সোনার ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।’
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবির জানান, এলাকাবাসী এই বাঁধটি নির্মাণ করেছেন। সেটিকে টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করা হচ্ছে।
Leave a Reply